জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (UNHCR)-এর নতুন তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, সহিংসতা এবং নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১২ কোটি ২০ লাখের বেশি। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০ লাখ বেড়েছে এবং গত এক দশকে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে জানানো হয়, এপ্রিল মাস পর্যন্ত যুদ্ধ, সহিংসতা ও নিপীড়নের কারণে নিজেদের দেশ কিংবা অন্য দেশে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ২১ লাখে, যা এক বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি। উদ্বাস্তু সংকটের এই ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি।
তিনি জানান, গত ছয় মাসে সিরিয়ার প্রায় ২০ লাখ মানুষ দেশে ফিরে আসায় কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর বাস্তুচ্যুত হওয়াদের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে স্থানান্তরিত মানুষের সংখ্যা ৯ শতাংশের বেশি বেড়ে ৭ কোটি ৩৫ লাখে দাঁড়িয়েছে। মূলত দশকের পর দশক ধরে চলা সংঘাত, সহিংসতা ও নির্যাতনের কারণে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
যদিও তাদের মধ্যে কেউ কেউ গত বছর নিজ দেশে ফিরে গেছেন, আবার অনেকে নতুন করে উদ্বাস্তু হয়েছেন।
সংস্থাটি জানিয়েছে, শরণার্থীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়। অনেক ধনী দেশে শরণার্থীদের গন্তব্য সম্পর্কে ভুল ধারণা রয়েছে।
তাদের ধারণা, উদ্বাস্তুরা উন্নত দেশগুলোতে, বিশেষ করে ইউরোপ বা আমেরিকায় যেতে চায়।
বর্তমানে, সুদান বিশ্বে বৃহত্তম বাস্তুচ্যুতির শিকার দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। সেখানে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সিরিয়ায় এই সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখ। এছাড়া, আফগানিস্তানে ১ কোটির বেশি এবং ইউক্রেনে প্রায় ৮৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এই প্রতিবেদন এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো মানবিক সংস্থাগুলোর জন্য বাজেট কাটছাঁট করছে। ফলে উদ্বাস্তু ও বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস