মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব, পিট হেগসেথের চিফ অফ স্টাফ জো ক্যাসপারের আকস্মিক পদত্যাগ ঘিরে বর্তমানে ওয়াশিংটনে বেশ আলোচনা চলছে। পেন্টাগনে ক্ষমতা দখলের এক নাটকীয় ঘটনার কেন্দ্রে ছিলেন তিনি, এমন অভিযোগও উঠেছে। ক্যাসপারের এই বিদায় তাই অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেও একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে হেগসেথ নিজেই জানিয়েছিলেন যে ক্যাসপার সম্ভবত প্রতিরক্ষা বিভাগের অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু পরবর্তীতে পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যাসপার জানান, তিনি শীঘ্রই সরকারি সম্পর্ক ও পরামর্শক হিসেবে পুরনো কাজে ফিরবেন। তবে পেন্টাগনের সঙ্গে তাঁর সীমিত কিছু সম্পর্ক বজায় থাকবে।
পেন্টাগনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ক্যাসপার বর্তমানে প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশেষ কিছু প্রকল্পের দায়িত্বে থাকবেন। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, হেগসেথ ক্যাসপারের নেতৃত্ব এবং ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ এজেন্ডা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে, যা মূলত বাণিজ্য ক্ষেত্রে সংরক্ষণবাদের উপর জোর দেয়।
জানা যায়, ক্যাসপারের এই দ্রুত প্রস্থানের কারণ, ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ। এই ঘটনায় পেন্টাগনের তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে – ড্যান ক্যাল্ডwell, ডারিন সেলনিক এবং কলিন ক্যারলকে – বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, এর পেছনে ছিলেন ক্যাসপার এবং এর কারণ ছিল গোপন তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে চলা একটি তদন্ত।
ক্যাসপারের কর্মজীবনের প্রথম ১০০ দিনে বেশ কিছু সমস্যা তৈরি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু সূত্র জানায়, তিনি প্রায়ই মিটিংয়ে দেরিতে আসতেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সময় মতো করতেন না। এমনকি কর্মকর্তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার এবং উচ্চ পর্যায়ের মিটিংগুলোতে তাঁর অশালীন মন্তব্য করারও অভিযোগ রয়েছে।
ক্যাসপারের এই বিদায়ের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই, হেগসেথের বিরুদ্ধে তাঁর পেন্টাগন অফিসে অসুরক্ষিত ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই সংযোগ সরকারের নিরাপত্তা প্রোটোকলকে এড়িয়ে ব্যক্তিগত কম্পিউটারে সিগন্যাল মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহারের জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। এই ‘ডার্টি লাইন’ ব্যবস্থা সংবেদনশীল প্রতিরক্ষা তথ্য আড়িপাতার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে ক্যাসপার ট্রাম্প প্রশাসনের সময় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ, মার্কিন নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীতে কাজ করেছেন। পরে তিনি লবিস্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান