টাইটানিক ট্র্যাজেডির এক প্রত্যক্ষদর্শীর চিঠি নিলামে রেকর্ড দামে বিক্রি হয়েছে। এই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী, কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির লেখা একটি চিঠি সম্প্রতি ৩ লক্ষ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশি মুদ্রায় এর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকার কাছাকাছি।
চিঠিটি ১৯১২ সালের ১০ই এপ্রিল তারিখে লেখা হয়েছিল, যেদিন গ্রেস টাইটানিক জাহাজে উঠেছিলেন।
১১ই এপ্রিল কুইন্সটাউন (বর্তমানে কোভ, আয়ারল্যান্ড) থেকে এটি পোস্ট করা হয় এবং ১২ই এপ্রিল লন্ডনে এর ডাকটিকিট লাগে। চিঠিতে গ্রেস টাইটানিক সম্পর্কে তাঁর প্রাথমিক অনুভূতির কথা উল্লেখ করেন।
তিনি লেখেন, “জাহাজটি সুন্দর, তবে এর সম্পর্কে চূড়ান্ত মন্তব্য করার আগে আমি আমার যাত্রার শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করব।”
ঐতিহাসিক এই চিঠিটি নিলামে তোলার আগে কখনোই বিক্রির জন্য উপলব্ধ ছিল না।
নিলাম পরিচালনাকারী সংস্থা ‘হেনরি অলড্রিজ অ্যান্ড সন’ জানিয়েছে, টাইটানিক জাহাজে লেখা কোনো চিঠির মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হওয়া চিঠি।
কর্নেল গ্রেস টাইটানিক দুর্ঘটনার একজন গুরুত্বপূর্ণ যাত্রী ছিলেন।
তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’ নামে একটি বইও লিখেছিলেন।
দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে গ্রেসের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তির চিঠি খুব কমই বাজারে আসে, যা এই চিঠির বিরলতা আরও বাড়িয়ে তোলে।
চিঠিটি গ্রেসির এক বন্ধুর মাধ্যমে লন্ডনের ওয়ালডর্ফ হোটেলে পৌঁছেছিল।
চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘ওশেনিক’ নামক জাহাজের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের কথা।
টাইটানিকের চাকচিক্য এবং বিনোদন ব্যবস্থা ‘ওশেনিক’-এর চেয়ে অনেক বেশি হলেও, সমুদ্রযাত্রার গুণ এবং নৌকার মতো দেখতে হওয়ায় তিনি পুরোনো সেই জাহাজের কথা খুব মিস করেন।
টাইটানিক ডুবে যাওয়ার সময় গ্রেস কিভাবে জীবন বাঁচিয়েছিলেন, সেই ঘটনাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তিনি অন্যান্য যাত্রীদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের লাইফবোটে উঠতে সাহায্য করেছিলেন।
তিনি বরফের মতো ঠান্ডা পানিতে ভেসে থাকা অন্যদের সাহায্য করতেও এগিয়ে গিয়েছিলেন।
গ্রেসের ভাষ্যমতে, যারা সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন, তাদের মধ্যে কেউই কোনো খারাপ ব্যবহার করেননি।
টাইটানিকের এই মর্মান্তিক ঘটনার স্মৃতি আজও বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করে।
কর্নেল গ্রেসির চিঠিটি সেই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা টাইটানিকের যাত্রী ও ঘটনার একটি উজ্জ্বল চিত্র তুলে ধরে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান