ভ্রমণে নিরাপত্তা: কিভাবে ছিনতাই, পকেটমার ও অন্যান্য বিপদ থেকে বাঁচবেন
বর্তমান যুগে ভ্রমণ একটি অতি পরিচিত বিষয়। বন্ধুদের সাথে হোক বা পরিবারের সঙ্গে, মানুষ এখন প্রায়ই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরতে যায়।
কিন্তু ভ্রমণের সময় কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ছিনতাই (mugging), পকেটমার (pickpocketing), এমনকি হোটেলের ঘরেও চুরির মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
তাই ভ্রমণের সময় নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। এই আর্টিকেলে, ভ্রমণের সময় আপনার সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসের কথা আলোচনা করা হলো, যা আপনাকে সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
১. গাড়ির চাবি সুরক্ষিত রাখুন:
ভ্রমণে গিয়ে গাড়ির নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চোরেরা গাড়ির চাবির সংকেত (signal) চুরি করতে পারে।
এর ফলে তারা আপনার গাড়ি সহজেই খুলে ফেলতে পারে। এই সমস্যা থেকে বাঁচতে Faraday Car Key Pouch ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই ছোট থলিটি আপনার গাড়ির চাবির সংকেতকে ব্লক করে, যা চোরদের পক্ষে গাড়িতে প্রবেশ করা কঠিন করে তোলে।
এটি দেখতেও খুবই সাধারণ, তাই আলাদা করে নজরে আসারও কোনো সম্ভাবনা নেই। বাজারে এর দাম আনুমানিক ১০০০ টাকার কাছাকাছি।
২. ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এলার্ম:
যদি কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতিতে পড়েন, তবে চিৎকার করে সাহায্য চাওয়ার সুযোগ নাও থাকতে পারে।
সেক্ষেত্রে She’s Birdie Personal Safety Alarm-এর মতো একটি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এলার্ম (Personal Safety Alarm) ব্যবহার করা যেতে পারে।
এটি আকারে ছোট এবং সহজে বহনযোগ্য। বিপদের সময়, এটি চালু করলে তীক্ষ্ণ শব্দ তৈরি হয় (১৩০ ডেসিবেল), যা সাহায্যকারীকে আকৃষ্ট করতে পারে এবং হামলাকারীকে ভয় দেখাতে পারে।
এটি প্রায় ১৫০০ টাকার কাছাকাছি দামে পাওয়া যায়।
৩. আত্মরক্ষামূলক স্প্রে ও স্টান গান:
আত্মরক্ষার জন্য, আপনি Sabre Pepper Spray Stun Gun With Flashlight-এর মতো একটি পণ্য সাথে রাখতে পারেন।
এটির মধ্যে রয়েছে একটি টর্চলাইট এবং একটি স্টান গান। আত্মরক্ষার জন্য এটি একটি কার্যকরী উপায় হতে পারে।
তবে, এই ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে অবশ্যই আপনার গন্তব্য স্থানের আইন সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।
বাংলাদেশে এর ব্যবহার বৈধ কিনা, তা নিশ্চিত করা জরুরি। যদিও এর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি, প্রায় ৫০০০ টাকার মতো, কিন্তু নিরাপত্তার জন্য এটি অনেক সময় জরুরি হতে পারে।
৪. এয়ারট্যাগ ও স্মার্টট্যাগ:
আপনার মূল্যবান জিনিসপত্রের সুরক্ষার জন্য Apple AirTag (বা Android ব্যবহারকারীদের জন্য SmartTag2) ব্যবহার করতে পারেন।
এটি আপনার হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এগুলি ছোট এবং সহজেই ব্যাগে রাখা যায়।
এগুলির মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যাগ বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ট্র্যাক করতে পারবেন। এগুলির দাম প্রায় ৩০০০ টাকার কাছাকাছি।
৫. মানিব্যাগ ও নেক ওয়ালেট:
পাসপোর্ট, টাকা ও জরুরি কাগজপত্র নিরাপদে রাখার জন্য Venture 4TH Travel Money Belt বা Hero Travel Supply Neck Wallet ব্যবহার করতে পারেন।
এইগুলি আপনার শরীরের সাথে লেগে থাকে, যা পকেটমারের পক্ষে সহজে চুরি করা কঠিন করে তোলে। এগুলির দাম প্রায় ২০০০-৩০০০ টাকার মধ্যে।
৬. অ্যান্টি-থেফট ব্যাগ:
আপনার জিনিসপত্র সুরক্ষিত রাখতে Vantamo Shoulder Bag-এর মতো অ্যান্টি-থেফট ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই ধরনের ব্যাগে চেইন কাটারোধক ব্যবস্থা ও আরএফআইডি (RFID)-ব্লকিং পকেট থাকে।
এইগুলি আপনার জিনিসপত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। এই ধরনের ব্যাগের দাম সাধারণত ৩০০০ টাকার বেশি হতে পারে।
৭. ছোট ক্লিপ:
যদি নতুন ব্যাগ কিনতে না চান, তাহলে Zpsolution Double Small Carabiner Clips ব্যবহার করতে পারেন।
এই ক্লিপগুলি আপনার ব্যাগের চেইন সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে, যা পকেটমারদের জন্য ব্যাগ খোলা কঠিন করে তোলে।
এগুলির দাম খুব বেশি নয়, প্রায় ৫০০ টাকার মতো।
৮. লক বক্স:
হোটেল বা অন্য কোনো স্থানে থাকার সময় আপনার মূল্যবান জিনিসপত্র যেমন – গয়না, পাসপোর্ট বা টাকা সুরক্ষিত রাখতে Amazon Basics Portable Security Case Lock Box Safe-এর মতো একটি ছোট লক বক্স ব্যবহার করতে পারেন।
এই ধরনের লক বক্স আপনার জিনিসপত্র নিরাপদে রাখতে সাহায্য করে। এগুলির দাম প্রায় ২৫০০ টাকার কাছাকাছি।
ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু অতিরিক্ত টিপস:
সতর্কতা অবলম্বন করে ভ্রমণ করলে, আপনি আপনার যাত্রাটিকে আরও আনন্দ-দায়ক করে তুলতে পারেন এবং অপ্রত্যাশিত বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: Travel and Leisure