1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
May 30, 2025 5:14 PM

ভিডিও দেখতে দেখতে জীবন শেষ! ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার মেটা মডারেটর!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Sunday, April 27, 2025,

সোশ্যাল মিডিয়ার অন্ধকার জগৎ: বিষয়বস্তু নিরীক্ষণের কাজ করতে গিয়ে মানসিক স্বাস্থ্য হারানো দুই কর্মীর অভিজ্ঞতা।

সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সারা বিশ্বের মানুষ এখন পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। মুহূর্তের মধ্যে খবর পৌঁছে যায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। কিন্তু এই অবাধ যোগাযোগের সুযোগের সঙ্গেই লুকিয়ে থাকে কিছু বিপদ।

বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য থেকে শুরু করে ভয়ংকর সব দৃশ্য – সবই তো দেখা যায় এখানে। আর এই সব খারাপ বিষয়গুলি নিয়মিতভাবে সরিয়ে ফেলার জন্য দিনরাত কাজ করেন কিছু মানুষ, যাঁর কাজটা সহজ নয়। সম্প্রতি, এমনটাই হয়েছে মেটা (Meta)-র বিষয়বস্তু নিরীক্ষণ (content moderation) করার কাজে যুক্ত কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে।

আফ্রিকার দেশ ঘানার আক্রা শহরে, মেটা-র হয়ে কাজ করা দুই কর্মী, সলোমন* এবং অ্যাবেল*-এর অভিজ্ঞতা শুনলে গা শিউরে ওঠে। তাঁদের কাজ ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম থেকে আপত্তিকর বিষয়বস্তুগুলি সরিয়ে ফেলা।

প্রথমে, তাঁরা এই কাজের গুরুত্ব অনুভব করেছিলেন। কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাঁরা এমন সব দৃশ্যের সম্মুখীন হন যা তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

সলোমন জানান, প্রশিক্ষণের সময় তিনি বিষয়টা সেভাবে উপলব্ধি করতে পারেননি। কিন্তু ধীরে ধীরে যখন নৃশংস দৃশ্যগুলি তাঁর সামনে আসতে শুরু করলো, তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে শুরু করেন।

তাঁর ভাষায়, “মানুষকে চামড়া তুলে নেওয়া হচ্ছে, শিশুদের প্রতি হওয়া অত্যাচারের দৃশ্য, এমনকী পর্নোগ্রাফি – এগুলি দেখতে দেখতে আমি যেন আমার মানবিকতা হারাতে শুরু করেছিলাম।” এই ধরনের বিষয়বস্তু দিনের পর দিন দেখতে দেখতে তিনি এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, একসময় তাঁর স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

তিনি ঘুমের ওষুধ খাওয়া শুরু করেন এবং দিনের বেলাতেও মদ্যপান করতেন। এক পর্যায়ে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

অন্যদিকে, অ্যাবেল নামের আরেকজন কর্মীও এই একই ধরনের অভিজ্ঞতার শিকার হন। তিনি জানান, “আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে, প্রতিদিন আমাকে এমন ভয়ংকর সব দৃশ্য দেখতে হবে।”

তিনি তাঁর বন্ধুর হয়ে কথা বলতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের রোষের শিকার হন এবং চাকরি হারান। অ্যাবেল-এর কথায়, সহকর্মীরা প্রায়ই এইসব দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করতেন, যা তাঁকে আরও বেশি হতাশ করে তুলেছিল।

তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার জন্য আবেদন জানালেও, তাঁর কথা শোনা হয়নি।

বিষয়বস্তু নিরীক্ষণের কাজ করতে গিয়ে কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য যে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সলোমন এবং অ্যাবেলের ঘটনা তারই প্রমাণ। এই ধরনের কর্মীদের জন্য উপযুক্ত মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা এবং কাজের পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।

কর্মীদের এই ধরনের অভিজ্ঞতার বিষয়ে মেটা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে, তারা জানায় যে, সলোমনের মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার পরে তারা তাকে অন্য একটি পদে কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছিল, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।

কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করে যে, তারা সলোমনকে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি।

এই ঘটনার মাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো দিকের পাশাপাশি, এর অন্ধকার দিকটিও আমাদের সামনে আসে। বিষয়বস্তু নিরীক্ষণের কাজ করতে গিয়ে কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর যে গভীর প্রভাব পড়ে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।

একই সাথে, কর্মীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের মানবিক আচরণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার প্রয়োজনীয়তাও এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, সুস্থ কর্মপরিবেশ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব।

*নামগুলি পরিচয় গোপন রাখার জন্য পরিবর্তন করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT