জার্মানিতে বিখ্যাত ঔপন্যাসিক আলেক্সান্ড্রা ফ্রোহলিখের রহস্যজনক মৃত্যু, তদন্তে পুলিশ।
জার্মানির হামবুর্গে নিজ হাউসবোটে (নৌকা-বাড়ি) খুন হওয়া জনপ্রিয় জার্মান ঔপন্যাসিক আলেক্সান্ড্রা ফ্রোহলিখের (৫৮) মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে এলবে নদীর তীরে ফ্রোহলিখের হাউসবোটে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
পুলিশের ধারণা, তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।
হামবুর্গ পুলিশের মুখপাত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার সকালে ফ্রোহলিখের ছেলে তাঁর মায়ের নিথর দেহ খুঁজে পান এবং সঙ্গে সঙ্গে দমকল বিভাগে খবর দেন। ফরেনসিক পরীক্ষার পর তদন্তকারীরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, ফ্রোহলিখের মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, বরং হত্যার শিকার হয়েছেন তিনি।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয়, তবে তারা সম্ভাব্য খুনিদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন এবং এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ফ্রোহলিখকে সম্ভবত গভীর রাতে, মধ্যরাত থেকে ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য ডুবুরি নামানো হয়েছে এবং সম্ভবত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
আলেক্সান্ড্রা ফ্রোহলিখ একাধারে সাংবাদিক ও লেখিকা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ইউক্রেনে একটি নারী বিষয়ক ম্যাগাজিন প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরে জার্মানিতে নারী ও অন্যান্য বিষয়ক ম্যাগাজিনে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেছেন।
২০১২ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘মাই রাশিয়ান মাদার-ইন-ল অ্যান্ড আদার ক্যাটাস্ত্রফি’ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। বইটি জার্মান বেস্টসেলার তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল এবং পরবর্তীতে ফরাসি ভাষায় অনূদিত হয়।
২০১৬ সালে প্রকাশিত তাঁর ক্রাইম থ্রিলার ‘ডেথ ইজ আ সার্টেনিটি’ও পাঠক মহলে দারুণ সাড়া ফেলেছিল। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘স্কেলেটনস ইন দ্য ক্লোজেট’ও তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। তাঁর লেখাগুলোতে হাস্যরস, পারিবারিক গল্প এবং সামাজিক বিষয়গুলো বিশেষভাবে ফুটে উঠেছে।
পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সন্ধান করছে।
তারা জানতে চাইছে, ফ্রোহলিখের পরিচিত কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা। এই ঘটনার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ জনসাধারণের কাছ থেকে কোনো তথ্য পেলে তাদের জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান