লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় রোববারের এই হামলায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
তবে এর আগে, গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো বৈরুতের এই অঞ্চলে আঘাত হানল ইসরায়েলি বিমান বাহিনী।
সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, হামলার আগে ইসরায়েলি বাহিনী স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেয় এবং হাদাথ এলাকা থেকে অন্তত ৩০০ মিটার দূরে সরে যেতে বলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার আগে সেখানকার আকাশে যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা যায় এবং বাসিন্দাদের সতর্ক করতে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়। আতঙ্কে মানুষজন ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে শুরু করে।
ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহর ঘাঁটিগুলো। এর আগে গত ২৮ মার্চ এবং ১ এপ্রিলও একই এলাকায় হামলা চালানো হয়। ১ এপ্রিলের হামলায় হিজবুল্লাহর এক কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছিলেন।
এদিকে, হিজবুল্লাহর শীর্ষ নেতা শেখ নাঈম কাসেম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইসরায়েলের হামলা যদি অব্যাহত থাকে এবং লেবানন সরকার যদি তা বন্ধ করতে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে হিজবুল্লাহ অন্য কোনো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি সেনা লেবাননের ভূখণ্ডে অবস্থান করা পর্যন্ত এবং ইসরায়েলি বিমান বাহিনী নিয়মিতভাবে আকাশসীমা লঙ্ঘন করা পর্যন্ত হিজবুল্লাহ অস্ত্র ত্যাগ করবে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ইসরায়েলের সেনারা জানুয়ারির শেষ নাগাদ লেবাননের সব ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে, হিজবুল্লাহরও কথা ছিল, তারা যেন লিটানি নদীর দক্ষিণ পাশে কোনো সশস্ত্র উপস্থিতি না রাখে।
অন্যদিকে, রোববার দিনের শুরুতে, ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় দক্ষিণ লেবাননের হালতা গ্রামে একজন নিহত হন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, নিহত ব্যক্তি হিজবুল্লাহর সদস্য ছিলেন এবং তিনি ওই অঞ্চলে হিজবুল্লাহর ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পুনর্গঠনের চেষ্টা করছিলেন।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের এই ধারাবাহিক বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিক এবং হিজবুল্লাহ সদস্যসহ বহু মানুষ নিহত হয়েছে।
ইসরায়েল দাবি করে, তারা হিজবুল্লাহর স্থাপনা ও কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
লেবাননের সেনাবাহিনী ধীরে ধীরে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে তাদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে।
লেবানন সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন ইসরায়েলের হামলা বন্ধ করতে এবং লেবাননের ভূখণ্ডে এখনও অবস্থান করা সেনাদের সরিয়ে নিতে চাপ সৃষ্টি করে।
তথ্যসূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা।