**ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৬৮, দাবি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর**
ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি কারাগারে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৬৮ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
হুতি বিদ্রোহীরা এই তথ্য জানালেও, মার্কিন সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সা’দা প্রদেশে, যা হুতিদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত, সেখানকার একটি কারাগারে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসী, যারা কাজের সন্ধানে প্রতিবেশী সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা ইয়েমেনের যুদ্ধ এবং সেখানকার মানবিক সংকটের মধ্যে এটি একটি নতুন সংযোজন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘অপারেশন রাফ রাইডার’-এর অংশ হিসেবে হুতি বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।
এই অভিযানের মধ্যেই এমন একটি খবর পাওয়া গেল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনারত।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা তাদের সামরিক কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে না, যা তারা সাধারণত করে থাকে।
তাদের মতে, ‘অপারেশনাল নিরাপত্তা’ বজায় রাখতে তারা এই পদক্ষেপ নেয়।
তবে, সা’দাতে হামলার বিষয়ে তারা তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
হুতি বিদ্রোহীদের আল-মাসিরাহ স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেলে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপে মৃতদেহ এবং আহতদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
হুতি পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই কারাগারে ১১৫ জন অভিবাসীকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল।
আল-মাসিরাহ পরে জানায়, হামলায় কমপক্ষে ৬৮ জন নিহত হয়েছে।
তবে, হতাহতের এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।
বিদ্রোহীদের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, হামলায় আরও ৪৭ জন আহত হয়েছে।
আহতদের উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে একটি বিস্ফোরণের চিহ্ন দেখা গেছে।
কারাগারের দেয়ালগুলি ধ্বংসস্তূপের টুকরো দিয়ে ঝাঁজরা হয়ে গিয়েছিল।
আহতদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই ইথিওপিয়া ও অন্যান্য আফ্রিকান দেশ থেকে আসা মানুষজন কাজের সন্ধানে ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরবে পাড়ি জমাতে গিয়ে নানা ধরনের ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
হুতি বিদ্রোহীরা সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার সময় অভিবাসীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে, ২০২২ সালে একই কারাগারে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় কমপক্ষে ৬৬ জন নিহত এবং ১১৩ জন আহত হয়েছিল।
জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, সেই হামলায় হুতি বিদ্রোহীরা পালিয়ে যাওয়া ১৬ জন বন্দীকে গুলি করে হত্যা করে এবং আরও ৫০ জনকে আহত করে।
সৌদি জোট অবশ্য দাবি করেছিল, হুতি বিদ্রোহীরা ওই স্থানে ড্রোন তৈরি ও তা ব্যবহার করছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের বিরুদ্ধে এই অভিযান চালাচ্ছে, কারণ তারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ এবং ইসরায়েলের ওপর হামলা চালাচ্ছে।
হুতি বিদ্রোহীরা ইরানের স্বঘোষিত ‘প্রতিরোধ অক্ষ’-এর শেষ শক্তিশালী দল, যারা নিয়মিতভাবে ইসরায়েলে হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান