নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য আগামী ৭ই মে থেকে গোপন কনক্লেভ শুরু করতে যাচ্ছে ভ্যাটিকান। প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর সোমবার ভ্যাটিকানে কার্ডিনালদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
খবর অনুযায়ী, বিশ্বের ক্যাথলিক চার্চের নতুন প্রধান নির্বাচনের জন্য গোপন এই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, কনক্লেভে অংশ নিতে পারবেন আশি বছরের কম বয়সী প্রায় ১৩৫ জন কার্ডিনাল। এই কার্ডিনালরা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ থেকে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন।
গোপন এই ভোট গ্রহণের জন্য ষোড়শ শতাব্দীর সিস্টিন চ্যাপেলকে প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং বর্তমানে এটি পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পোপ নির্বাচনের এই প্রক্রিয়াকে কনক্লেভ বলা হয়। সাধারণত, কনক্লেভ কয়েক দিন স্থায়ী হয়।
এর আগে ২০০৫ এবং ২০১৩ সালের কনক্লেভ দুই দিন ধরে চলেছিল। তবে, সুইডেনের কার্ডিনাল অ্যান্ডার্স আর্বোরেলিয়াসের ধারণা, এবারকার কনক্লেভটি সম্ভবত বেশি সময় নিতে পারে।
কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, পোপ ফ্রান্সিস বিভিন্ন দেশ থেকে কার্ডিনাল নিয়োগ করেছেন, যাদের মধ্যে অনেকের সঙ্গেই অন্যদের আগে পরিচয় ছিল না।
উদাহরণস্বরূপ, মিয়ানমার, হাইতি এবং রুয়ান্ডার মতো জায়গা থেকে কার্ডিনাল নিয়োগের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি ৬ই মে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, তবে একদিন পর শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর ফলে কার্ডিনালরা গুরুত্বপূর্ণ ভোটের আগে আলোচনার জন্য সামান্য বেশি সময় পাবেন।
উল্লেখ্য, গত ২১শে এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণ হয়। তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল।
জার্মানির কার্ডিনাল ওয়াল্টার কাসপার এক সাক্ষাৎকারে জানান, শোকাহত মানুষের এই ভিড় প্রমাণ করে যে, ক্যাথলিকরা চান নতুন পোপ যেন ফ্রান্সিসের সংস্কারমূলক নীতিগুলো অনুসরণ করেন।
পোপ ফ্রান্সিস, যিনি ২০১৬ সাল থেকে এই পদে ছিলেন, তিনি ল্যাটিন আমেরিকা থেকে আসা প্রথম পোপ ছিলেন। তিনি প্রায়শই চার্চের রক্ষণশীল প্রথা ভেঙে নতুন আলোচনার সূচনা করতেন।
উদাহরণস্বরূপ, তিনি নারী যাজকদের নিয়োগ এবং এলজিবিটি সম্প্রদায়ের প্রতি ক্যাথলিকদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার মতো বিষয়গুলোতে আলোচনা শুরু করেছিলেন।
অন্যদিকে, কিছু রক্ষণশীল কার্ডিনাল রয়েছেন, যারা ঐতিহ্যকে আরও বেশি গুরুত্ব দেন এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক চার্চের ধারণার পরিবর্তে পুরনো রীতি-নীতি ফিরিয়ে আনতে চান।
এমন পরিস্থিতিতে নতুন পোপ নির্বাচনে কে জয়ী হবেন, সেদিকেই এখন সবার নজর।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান