ডিজনির প্রাক্তন কর্মী, যিনি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে খাদ্যতালিকা পরিবর্তন করেছিলেন, তিন বছরের কারাদণ্ড পেলেন। সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক উদ্বেগের মধ্যে, সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা ঘটেছে যা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বিনোদন সংস্থা ডিজনি-র প্রাক্তন কর্মী মাইকেল স্কিউয়ার, যিনি কোম্পানির সার্ভারে প্রবেশ করে খাদ্যতালিকা পরিবর্তনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন, তাকে এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, স্কিউয়ার একসময় ডিজনির মেনু প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। তার কাজ ছিল রেস্টুরেন্টগুলোর জন্য মেনু তৈরি ও প্রকাশ করা।
এই সুবাদে তিনি কোম্পানির অভ্যন্তরীণ সার্ভারে প্রবেশাধিকার পেতেন। কিন্তু গত বছর, চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর, তিনি সেই সুযোগের অপব্যবহার করেন।
কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্কিউয়ার মেনুতে পরিবর্তন এনেছিলেন, যার মধ্যে ছিল খাবারের দাম পরিবর্তন, আপত্তিকর ভাষা যোগ করা এবং খাদ্য উপাদানের ভুল তথ্য দেওয়া।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ ছিল, তিনি কিছু খাবারের উপাদান সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে জনসাধারণের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টি করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, বাদাম যুক্ত একটি মেনু আইটেমকে তিনি ‘বাদাম মুক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন, যা বাদাম এলার্জি থাকা ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারতো।
ডিজনির কর্মীরা যখন মেনুর টেক্সট ফন্ট পরিবর্তন করে উইংডিং-এর মতো প্রতীকী চিহ্ন ব্যবহার করতে দেখেন, তখনই তারা এই হ্যাকিংয়ের বিষয়টি বুঝতে পারেন। এর ফলে মেনু তৈরি করার সিস্টেমটি অচল হয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টে স্কিউয়ারের বিচার হয়। আদালতে তিনি কম্পিউটার ফ্রড এবং পরিচয় চুরির মতো গুরুতর অপরাধের কথা স্বীকার করেন।
বিচারক তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন এবং ৬ লক্ষ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ৭ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার সমান।
স্কিউয়ারের আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেল তার প্রাক্তন সহকর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা এবং তথ্য সুরক্ষার গুরুত্ব আরও একবার প্রমাণিত হলো। ডিজিটাল যুগে, যখন সবকিছুই ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত, তখন তথ্য সুরক্ষিত রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: CNN