যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কয়েকজন মায়ের তাদের শিশু সন্তানদের সঙ্গে হন্ডুরাসে ফেরত পাঠানোর ঘটনায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে সেখানকার অভিবাসন বিষয়ক নীতিগুলি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ফেরত পাঠানো মায়েরা তাদের সন্তানদের তত্ত্বাবধানের ব্যবস্থা করার কোনো সুযোগ পাননি। তাদের অভিযোগ, শিশুদের দেখাশোনার দায়িত্ব অন্য কারও কাছে হস্তান্তরেরও কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি তাদের।
জানা গেছে, দুই জন মায়ের মধ্যে একজন তার সাত ও চার বছর বয়সী, উভয় মার্কিন নাগরিক সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে ফেরত পাঠানো হন। এই মায়ের ছোট সন্তানের ক্যান্সার ছিল এবং তার চিকিৎসার জন্য ওষুধ ও বিশেষ যত্নের প্রয়োজন ছিল।
এছাড়াও, অন্য এক নারী, যিনি সন্তানসম্ভবা ছিলেন, তাকেও ১১ ও ২ বছর বয়সী দুই মেয়ের সঙ্গে হন্ডুরাসে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, মায়েরা যখন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস)-এর সঙ্গে নিয়মিত সাক্ষাত করতে যেতেন, তখনই তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের শহর থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়।
তাদের অভিযোগ, শিশুদের ভবিষ্যতের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ারও সুযোগ দেওয়া হয়নি।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর আইনজীবীরা বলছেন, কোনো মা-বাবাই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে চান না। তারা মনে করেন, শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল।
এই ঘটনার সমালোচনা করে মানবাধিকার সংস্থা ও আইনপ্রণেতারা বলেছেন, শিশুদের সঙ্গে মায়েদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত মানবিকতার পরিপন্থী। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ আইনি ছিল।
তবে, মামলার সঙ্গে জড়িত আইনজীবীরা বলছেন, শিশুদের ফেরত পাঠানোর আগে অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের দেখাশোনার ব্যবস্থা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিশেষ করে, যাদের অভিভাবক অন্য কেউ ছিল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি।
উদাহরণস্বরূপ, ‘ভিএমএল’ নামের এক শিশুর (আদালতের নথি অনুযায়ী, শুধুমাত্র আদ্যক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে) ক্ষেত্রে, তার বাবার সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। শিশুটিকে যাতে পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের কাছে রাখা যায়, সেই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতেও দেওয়া হয়নি।
বর্তমানে, ভিএমএল-এর মামলার শুনানি আগামী ১৮ই মে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান