শিরোনাম: আমেরিকার নির্বাচনে ভোট নিয়ে জটিলতা, ‘ভুল’ তথ্যের জেরে ঝুঁকিতে কয়েক হাজার ভোটারের ভাগ্য
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের একটি আসনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন এমন কয়েক হাজার ভোটারের ভাগ্য এখন অনিশ্চিত।
মূলত কিছু ভোটারের তথ্যে ‘ভুল’ থাকার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, নির্বাচনে ভোট দেওয়া কয়েকজন ভোটার তাদের আবেদনপত্রে এমন কিছু তথ্য দিয়েছেন যা সঠিক ছিল না।
এর জেরে তাদের ভোট বাতিল হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে ডেমোক্রেট দলের প্রার্থী অ্যালিসন রিগস সামান্য ভোটের ব্যবধানে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী জেফারসন গ্রিফিনকে পরাজিত করেন।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর গ্রিফিন কিছু ভোটারের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, কিছু ভোটার হয়রানির শিকার হয়েছেন এবং তাদের ভোট প্রদানের অধিকার নেই।
অভিযোগের তীর মূলত ওইসব ভোটারের দিকে, যারা নর্থ ক্যারোলাইনার বাসিন্দা না হয়েও রাজ্যের সঙ্গে তাদের পারিবারিক সম্পর্ক থাকার কারণে ভোট দিয়েছেন।
আইন অনুযায়ী, অন্য রাজ্যে বসবাসকারী এমন নাগরিক, যাদের বাবা-মা নর্থ ক্যারোলাইনার বাসিন্দা ছিলেন, তারাও সেখানকার নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।
কিন্তু গ্রিফিন এদের মধ্যে কিছু ভোটারের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছেন জোসিয়া ইয়ং নামের এক তরুণ। তিনি নর্থ ক্যারোলাইনাতেই জন্ম গ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই বেড়ে উঠেছেন।
বর্তমানে তিনি একটি কলেজে পড়াশোনা করছেন। গত বছর তিনি স্পেন থেকে অনলাইনে ভোট দেন।
কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড পূরণ করার সময় তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবে একটি ঘরে ভুল তথ্য দেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি আগে কখনো যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেননি।
যদিও বাস্তবে, তিনি সবসময় নর্থ ক্যারোলাইনাতেই ছিলেন।
জানা গেছে, এমন আরও অনেকে রয়েছেন, যারা হয়তো একই ধরনের ভুল করেছেন। এই ভুলের কারণে তাদের ভোট বাতিল হতে পারে।
তবে, ইয়ংয়ের মতো ভুক্তভোগীরা বলছেন, তাদের এই ভুলের কারণ হলো তথ্য পূরণ করার সময় অসাবধানতা। তারা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো রকম সতর্কবার্তা পাননি।
বিষয়টি এখন আদালতের বিবেচনাধীন। আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে, এই ভোটারদের ভোট গণনা করা হবে কিনা।
নর্থ ক্যারোলাইনা সুপ্রিম কোর্ট প্রাথমিকভাবে এই ভোটারদের ভোট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে, ফেডারেল আদালত এখন এই বিষয়ে শুনানির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা আমেরিকার নির্বাচনী ব্যবস্থায় অনাস্থা সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, এর ফলে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, ভোটারদের অধিকার রক্ষা এবং নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
তথ্যসূত্র: সিএনএন