যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দা, যা সম্ভবত কোভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া কিছু নীতিমালার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাণিজ্য নীতিতে আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে ভোক্তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ, যার প্রভাব পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যেও।
মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের দেওয়া প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বেড়েছে মাত্র ০.৮ শতাংশ হারে। যদিও আটলান্টা ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক ধারণা করছে, এই হার কমে -২.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক নীতির কারণে অনেক আমেরিকান ব্যবসায়ী ও ভোক্তা আমদানি বাড়িয়েছেন, যার ফলে জিডিপি কমেছে। এছাড়াও, বছরের শুরুতে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কেনাকাটা কমে যাওয়া এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় অর্থনীতির এই দুর্বল অবস্থা তৈরি হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া শুল্ক নীতিগুলোর কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। চীন, মেক্সিকো ও কানাডার মতো দেশগুলোর পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া, অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশ, চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানো হয়েছে। এই পদক্ষেপের কারণে আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। জানুয়ারিতে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে ১৩০.৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছিল, যা ১৯৯৪ সালের পর সর্বোচ্চ। ফেব্রুয়ারিতে কিছুটা কমলেও তা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘাটতি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ভোক্তাদের ব্যয় এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় অর্থনীতির এই মন্দা দেখা দিয়েছে। জানুয়ারিতে পণ্য ও সেবার ওপর খরচ ০.৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল। মার্চ মাসে অবশ্য কেনাকাটা কিছুটা বাড়লেও, তা ছিল সাময়িক।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়বে এবং বাংলাদেশের বাণিজ্য ও রেমিট্যান্সের ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন