যুক্তরাজ্য সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছে। এই হামলাটি ছিল ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন সামরিক অভিযানের অংশ।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা সচিব জন হিলি জানিয়েছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য ছিল লোহিত সাগরে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। হুতি বিদ্রোহীদের ক্রমাগত হুমকির কারণে ইতোমধ্যে লোহিত সাগরে জাহাজের চলাচল ৫৫ শতাংশ কমে গেছে, যার ফলে আঞ্চলিক অস্থিরতা বাড়ছে এবং যুক্তরাজ্যের পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
জানা গেছে, এই যৌথ অভিযান ‘অপারেশন রাফ রাইডার’ নামে পরিচিত। ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত একটি স্থানে এই হামলা চালানো হয়।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর, হুতি বিদ্রোহীরা ঐ স্থানটিতে ড্রোন তৈরি করত, যা লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে জাহাজগুলোকে আক্রমণের জন্য ব্যবহার করা হতো।
হামলায় রয়্যাল এয়ার ফোর্সের টাইফুন এফজিআর৪ যুদ্ধবিমানগুলো ‘পাভেওয়ে চতুর্থ’ গাইডেড বোমা ব্যবহার করে।
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলাটি রাতের বেলা চালানো হয়েছিল, যাতে বেসামরিক হতাহতের সম্ভাবনা কমানো যায়। তবে, হামলায় কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা কেউ নিহত হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
মার্কিন সামরিক বাহিনীও এখন পর্যন্ত এই হামলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
উল্লেখ্য, এর আগে, চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা শুরু করে। তবে এই নতুন হামলাটি যুক্তরাজ্যের জন্য একটি নতুন পদক্ষেপ, যেখানে তারা সরাসরি এই অভিযানে অংশ নিয়েছে।
এর আগে, গত জানুয়ারিতেও যুক্তরাষ্ট্র হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়েছিল, যেখানে ব্রিটিশ বাহিনী সহযোগী হিসেবে ছিল।
এদিকে, হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে চালানো মার্কিন বিমান হামলায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
সম্প্রতি, একটি মার্কিন হামলায় ইয়েমেনের একটি অভিবাসী বন্দীশালায় অন্তত ৬৮ জন নিহত এবং ৪৭ জন আহত হয়েছে।
এছাড়াও, ১৮ এপ্রিল, রাস ইসা তেল বন্দরে চালানো এক হামলায় অন্তত ৭৪ জন নিহত এবং ১৭০ জনের বেশি আহত হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে লোহিত সাগর এবং আরব সাগরে অবস্থিত দুটি বিমানবাহী জাহাজ – ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যান এবং ইউএসএস কার্ল ভিনসন থেকে ইয়েমেনে হামলা চালাচ্ছে।
হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজ এবং ইসরায়েলের উপর হামলা চালাচ্ছে, যে কারণে তাদের লক্ষ্য করে এই হামলাগুলো চালানো হচ্ছে।
হুতিরা ইরানের সমর্থনপুষ্ট একটি মিলিট্যান্ট গ্রুপ এবং তারা ইরানের স্বঘোষিত ‘প্রতিরোধ অক্ষ’-এর অংশ হিসেবে ইসরায়েলের উপর নিয়মিত হামলা চালায়।
এই ঘটনার পাশাপাশি, মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পেটে হেগসেথের বিরুদ্ধে সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ‘সিগনাল’ নামক একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান