যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের প্রধান হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত রডনি স্কটের বিরুদ্ধে, অভিবাসনপ্রত্যাশী এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এই গুরুতর অভিযোগ এনেছেন দেশটির সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
খবরটি জানিয়েছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’।
অভিযোগকারী জেমস ওং নামের ওই সাবেক কর্মকর্তার দাবি, ২০১০ সালে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সময় সীমান্তরক্ষীদের মারধরে নিহত হন আনাস্তাসিও হার্নান্দেজ রোজাস।
এই ঘটনার তদন্তে তৎকালীন সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে রডনি স্কট ‘গোপন তৎপরতা’ চালিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে জেমস ওং উল্লেখ করেছেন, স্কট তথাকথিত ‘ক্রিটিক্যাল ইনসিডেন্ট টিম’ (সিআইটি)-এর কার্যক্রমের তদারকি করতেন।
মূলত, সীমান্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটলে, দায় কমানোর উদ্দেশ্যে এই দলগুলো কাজ করত।
যদিও, বিতর্কিত এই দলটিকে ২০২২ সালে বিলুপ্ত করা হয়।
ওংয়ের ভাষ্যমতে, রোজাসের মৃত্যুর ঘটনায় সিআইটি সদস্যরা তাঁর চিকিৎসার কাগজপত্র হাতিয়ে নিয়েছিল, যা ছিল ‘প্রকাশ্যে বেআইনি’।
সেনেট ফাইন্যান্স কমিটির শুনানির আগে ডেমোক্র্যাট দলের শীর্ষ সদস্যের কাছে পাঠানো চিঠিতে ওং আরও লিখেছেন, “এই ঘটনার তদন্ত নয়, বরং ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
রডনি স্কট নিজেই এর তত্ত্বাবধান করেছেন।
ক্ষমতার এই অপব্যবহার তাঁকে দেশের বৃহত্তম আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়ার অযোগ্য করে তোলে।
রডনি স্কট অবশ্য এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে, ডেমোক্রেট সিনেটর রন উইডেন এই ঘটনার তদন্তের জন্য দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তরে রোজাসের মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত নথি চেয়েছেন।
উইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, “যিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ, তাঁর হাতে যদি বিশাল নিরাপত্তা কাঠামো থাকে, তবে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।”
উল্লেখ্য, সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগের কর্মীরা প্রায়শই অভিবাসীদের প্রথম মুখোমুখি হন।
কমিশনার হিসেবে স্কট, অভিবাসন নীতিতে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারতেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে, আশ্রয়প্রার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দেন এবং মেক্সিকো সীমান্তে সেনা মোতায়েনেরও নির্দেশ দেন।
রডনি স্কটের কর্মজীবন বিতর্কিত ছিল।
বাইডেন প্রশাসন ২০২১ সালে তাঁকে সীমান্তরক্ষীর চাকরি থেকে সরিয়ে দেয়।
এর কারণ হিসেবে জানা যায়, তিনি অভিবাসীদের ‘অবৈধ’ বলার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
এছাড়াও, সীমান্তরক্ষীদের একটি ফেসবুক গ্রুপের সঙ্গে স্কটের যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
যেখানে সদস্যরা কংগ্রেস সদস্যদের নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করতেন এবং অভিবাসীদের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ আচরণ করতেন।
যদিও রিপাবলিকান সিনেটররা স্কটের মনোনয়নের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সিনেটর জন করনিন, স্কটকে ‘অসাধারণ পছন্দ’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান