বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল মাধ্যমের উত্থান দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এই পরিবর্তনের হাওয়ায়, প্রখ্যাত সাংবাদিক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব পিয়ার্স মরগান মনে করেন, সনাতন ধারার মিডিয়ার দিন শেষ হতে চলেছে।
তাঁর মতে, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলি খুব শীঘ্রই সংবাদ পরিবেশন এবং বিনোদনের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী মাধ্যমগুলোকে ছাপিয়ে যাবে।
পিয়ার্স মরগান একসময় নামকরা একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন এবং টেলিভিশনেও পরিচিত মুখ ছিলেন। বর্তমানে তিনি তাঁর ‘পিয়ার্স মরগান আনসেন্সর্ড’ নামে ইউটিউব চ্যানেল চালান।
এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারণে অনেক ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া, বিশেষ করে সংবাদপত্র, ভবিষ্যতে টিকে থাকতে পারবে না। তাঁর মতে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে খবর ও বিনোদন গ্রহণের ধরন দ্রুত পাল্টাচ্ছে, যা সনাতন মিডিয়ার জন্য একটি সতর্কবার্তা।
মরগান তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের সাফল্যের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ইউটিউবের স্বাধীনতা এবং কম খরচে বিশ্বব্যাপী দর্শকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব। তিনি উদাহরণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে কোটি কোটি মানুষ ইউটিউবে নির্বাচনী অনুষ্ঠান দেখেছেন, যা সনাতন টিভি চ্যানেলগুলির দর্শক সংখ্যার চেয়ে বেশি ছিল।
পিয়ার্স মরগান মনে করেন, এখন সময় এসেছে পুরনো ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার। তাঁর মতে, যারা এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে পারবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, অনেক প্রথিতযশা সাংবাদিক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে ইউটিউবে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মরগান তাঁর ইউটিউব চ্যানেলকে একটি শক্তিশালী মিডিয়া প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চান। তিনি যুক্তরাজ্যে গ্যারি লিনেকারের ‘গোলহ্যাঙ্গার প্রোডাকশনস’-এর মতো একটি সফল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চান।
তবে তাঁর লক্ষ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বজুড়ে দর্শকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করা। তাঁর পরিকল্পনা হলো, সত্য ঘটনা, ইতিহাস এবং খেলাধুলার মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করা।
মরগান বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করছেন। তিনি মনে করেন, তাঁর ব্যবসার ভালো সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর মাধ্যমে তিনি একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করতে পারবেন।
তাঁর মতে, ডিজিটাল মাধ্যমের এই উত্থান একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, যেখানে দর্শকদের রুচি এবং চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: The Guardian