স্পেন ও পর্তুগালে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে, যার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সোমবার দুপুরে এই বিভ্রাট শুরু হয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলে। এতে স্পেনে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুতের অভাবে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং বহু মানুষ লিফটে আটকা পড়েন।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বেসরকারি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর সাহায্য চেয়েছেন। একইসঙ্গে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে সাইবার হামলার দিকটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্পেনের শীর্ষ আদালত এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে, পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী লুই মন্টেনিগ্রো ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা চেয়েছেন, যাতে একটি স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার আসল কারণ খুঁজে বের করা যায়।
প্রধানমন্ত্রী সানচেজ জরুরি ভিত্তিতে বেসরকারি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং তাদের দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে এবং তদন্তে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলো বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তাদের অভিযোগ, সরকার নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর বেশি জোর দিতে গিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুতের গুরুত্ব কমিয়েছে, যার ফলস্বরূপ এই বিভ্রাট।
যদিও প্রধানমন্ত্রী সানচেজ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, যারা পারমাণবিক বিদ্যুতের অভাবকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করছেন, তারা হয় মিথ্যা বলছেন, না হয় বিষয়টি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
তদন্তকারীরা মূলত সোমবার দুপুর ১টা ৩৩ মিনিটের দিকে হওয়া ১৫ গিগাওয়াট বিদ্যুতের অভাবের কারণ অনুসন্ধান করছেন। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ ছিল স্পেন ও পর্তুগালের মোট বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশ। এই ঘটনার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে বিদ্যুতের এই অভাব দেখা দেয়।
এই ঘটনার জেরে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়েছে। উন্নত অবকাঠামো এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ যে কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হলে তা কেবল জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে না, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তাই, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান