নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানায় বিরল প্রজাতির একটি শকুন ছানার জীবন বাঁচাতে অভিনব এক কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। ছানাটিকে মানুষের সঙ্গে বেশি মিশতে না দিয়ে, শকুন আকৃতির একটি হাতের পুতুল ব্যবহার করে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।
বন্য পরিবেশে শকুন ছানারা অনেক সময় তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় যত্ন পায় না। তাই তাদের সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখতে এই ধরনের কৌশল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শকুন প্রজাতি সংরক্ষণে চিড়িয়াখানাটির এই প্রচেষ্টা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। সাধারণত, শকুনদের মধ্যে যারা রাজা গোত্রের, তারা তাদের বাচ্চাদের প্রতি অনেক সময় অমনোযোগী থাকে।
ফলে, বাচ্চাগুলোর জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এই কারণেই, ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার কর্মীরা প্রায় চার দশক আগে এই বিশেষ পদ্ধতিটি তৈরি করেন। এর আগে, তারা সফলভাবে এন্ডিয়ান কন্ডর পাখি এবং বিলুপ্তপ্রায় ক্যালিফোর্নিয়ান কন্ডর-এর বাচ্চাগুলোকে বাঁচাতে এই কৌশল ব্যবহার করেছিলেন।
চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে যে শকুন ছানাটিকে এভাবে পরিচর্যা করা হচ্ছে, সেটি ১৯৯০-এর দশকের পর জন্ম নেওয়া প্রথম কিং ভালচার বা রাজা শকুন। জানা গেছে, শকুন ছানাটির বাবা প্রায় ৫৫ বছর বয়সী এবং তার আর একটিমাত্র জীবিত সন্তান রয়েছে।
তাই এই ছানাটির মাধ্যমে বাবা শকুনটির জিনগত বৈশিষ্ট্য টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
হাতের পুতুলের মাধ্যমে খাবার খাওয়ানোর সময়, কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারা নিশ্চিত করেন, ছানাটি যেন মানুষের প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পড়ে।
খাবার খাওয়ানোর সময়, একটি প্রাপ্তবয়স্ক শকুনকে কাছাকাছি রাখা হয়, যাতে ছানাটি শকুনদের স্বাভাবিক আচরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। এই পদ্ধতি শকুন ছানাটিকে সুস্থ রাখতে এবং বন্য পরিবেশে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে সহায়ক।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশেও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার। ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার এই উদ্যোগ আমাদের জন্য একটি শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত।
তথ্য সূত্র: Associated Press