যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য উত্তেজনা এবং ডেটা সুরক্ষার উদ্বেগের মধ্যে, মাইক্রোসফট ঘোষণা করেছে যে তারা ইউরোপে তাদের কার্যক্রম রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সাথে, কোম্পানিটি আগামী দুই বছরে তাদের ডেটা সেন্টারের ক্ষমতা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
ব্রাসেলসে এক অনুষ্ঠানে মাইক্রোসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ এই ঘোষণা করেন।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বিভিন্ন নীতিগত পরিবর্তনের কারণে অনেক ইউরোপীয় দেশ তাদের ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে, মাইক্রোসফট তাদের ইউরোপীয় গ্রাহকদের আশ্বস্ত করতে চাইছে যে তারা নির্ভরযোগ্য পরিষেবা দিতে প্রস্তুত।
মাইক্রোসফটের প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড স্মিথ জোর দিয়ে বলেন, তারা ইউরোপে তাদের ক্লাউড পরিষেবা বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাবে। এমনকি, এই ধরনের কোনো পদক্ষেপের সম্মুখীন হলে, তারা সুইজারল্যান্ডে কম্পিউটার কোড সংরক্ষণ করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যা ইউরোপীয় অংশীদারদের জন্য সহজলভ্য হবে।
ইউরোপে ডেটা সেন্টার সম্প্রসারণের জন্য মাইক্রোসফট বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আগামী দুই বছরে ডেটা সেন্টারের ক্ষমতা বৃদ্ধি, যা প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
এছাড়াও, সংস্থাটি ১৬টি দেশে তাদের ডেটা সেন্টার কার্যক্রম প্রসারিত করতে চাইছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞে প্রতি বছর কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে।
এই পদক্ষেপগুলো ইউরোপের প্রযুক্তিগত স্বাধীনতা বা ডেটা সার্বভৌমত্বের প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রেক্ষাপটে নেওয়া হয়েছে। ইউরোপ চাইছে, তারা যেন তাদের ডেটা সংরক্ষণে আরও বেশি স্বনির্ভর হতে পারে।
বর্তমানে, অনেক ইউরোপীয় দেশ তাদের ডেটা সংরক্ষণের জন্য মাইক্রোসফট, অ্যামাজন এবং গুগলের মতো বৃহৎ মার্কিন ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারীদের উপর নির্ভরশীল। মাইক্রোসফটের এই বিনিয়োগ এবং প্রতিশ্রুতির ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো তাদের ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে আরও বেশি নিশ্চয়তা পাবে।
ডিজিটালাইজেশনের এই যুগে, নির্ভরযোগ্য ক্লাউড সার্ভিসের গুরুত্ব বাড়ছে, বিশেষ করে ব্যবসা এবং সরকারি পরিষেবাগুলোতে। বাংলাদেশেও ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এক্ষেত্রে, ডেটার নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। মাইক্রোসফটের এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে ডেটা সার্বভৌমত্ব এবং প্রযুক্তির নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার বৃহত্তর প্রবণতাকে তুলে ধরে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস