জুন মাস! ভ্রমণের জন্য আদর্শ একটি সময়, যখন পৃথিবীর অনেক স্থানেই মনোরম আবহাওয়া বিরাজ করে। যারা একটু ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য জুন মাসে ঘুরে আসার মতো কয়েকটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হলো – যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশভিল, সুইডেন, পেরুর কুস্কো, মালয়েশিয়ার বোর্নিও এবং ওয়েলসের পেমব্রোকশায়ার।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক এই স্থানগুলোর বিশেষত্ব।
প্রথমেই আসা যাক যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসী অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিলের কথায়। সঙ্গীত প্রেমীদের জন্য জুন মাস যেন এক স্বর্গরাজ্য।
কারণ, এই সময়ে এখানে অনুষ্ঠিত হয় ‘বনারু মিউজিক অ্যান্ড আর্টস ফেস্টিভ্যাল’। এটি শুধু একটি সঙ্গীত উৎসবই নয়, বরং কমেডি, সিনেমা, ইন্টারেক্টিভ আর্ট, ফুড ট্রাক ও ইয়োগার মতো নানা আয়োজনের এক বিশাল সমাহার।
এছাড়া, কান্ট্রি মিউজিক ভালোবাসলে উপভোগ করতে পারেন ‘সিএমএ ফেস্টিভ্যাল’। এখানে ডাইর্কস বেন্টলি, কেইথ আর্বান ও ক্যারি আন্ডারউডের মতো শিল্পীরা বিনামূল্যে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
যারা বিনামূল্যে সঙ্গীত উপভোগ করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য রয়েছে ‘মেক মিউজিক ন্যাশভিল’। ২১শে জুন তারিখে স্থানীয় শিল্পীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে, যেমন – রাস্তায়, পার্কে, এমনকি বিমানবন্দরেও গান পরিবেশন করেন।
এবার চলুন উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দেশ সুইডেনে। জুন মাসে এখানে দিনের আলো দীর্ঘ সময় ধরে স্থায়ী হয়।
বিশেষ করে, সুমেরু বৃত্তের কাছাকাছি অঞ্চলে, রাতের আকাশে সোনালী আভা দেখা যায়। যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তারা সুইডিশ ট্যুরিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে ‘মিডনাইট সান হাইকিং’-এ অংশ নিতে পারেন।
এছাড়া, জুন মাসের শেষে এখানে ‘মিডসামার পার্টি’র আয়োজন করা হয়। এই উৎসবে মেপোল নাচের (Maypole dance) মতো ঐতিহ্যপূর্ণ নানা অনুষ্ঠান উপভোগ করা যায়।
পেরুর কুস্কো শহরটি ইনকা সভ্যতার স্মৃতি বিজড়িত এক স্থান। এখানে প্রতি বছর ‘ইন্তি রায়মি’ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
এটি ইনকা সাম্রাজ্যের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে পাঁচশো বছর ধরে। এই উৎসবে সূর্যের প্রতি সম্মান জানানো হয় এবং বিভিন্ন লোকনৃত্য ও ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।
যারা ট্রেকিং ভালোবাসেন, তারা এখানে ইনকা ট্রেইলে হেঁটে ১৫ শতকের পুরনো ‘মাচু পিচু’র ধ্বংসাবশেষ দেখতে পারেন।
জুন মাস ট্রেকিংয়ের জন্য বেশ উপযুক্ত।
বোর্নিও দ্বীপ মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রুনাই – এই তিনটি দেশের অংশ। মালয়েশিয়ার বোর্নিওতে গেলে বিরল প্রজাতির ওরাংওটাং-এর দেখা পাওয়া যায়।
বনের গভীরে এদের বিচরণ পর্যটকদের জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা। এছাড়া, এখানে কচ্ছপের ডিম পাড়ার মৌসুমও শুরু হয়।
সেলিংগান দ্বীপে রাতে কচ্ছপেরা ডিম পাড়তে আসে, যা সত্যিই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।
পেমব্রোকশায়ার, ওয়েলসের একটি দ্বীপ, যা বন্যপ্রাণীর জন্য বিখ্যাত।
এখানে আটলান্টিক পাফিন পাখির (Atlantic puffin) সংখ্যা অনেক। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্কোমার দ্বীপ থেকে মার্টিন’স হ্যাভেনে নৌকায় করে ভ্রমণ করা যায়।
এছাড়া, এখানকার সমুদ্র সৈকতে হাইকিংয়েরও সুযোগ রয়েছে।
জুন মাসে ভ্রমণের জন্য উল্লেখিত স্থানগুলো প্রত্যেকটিই তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে ভ্রমণ প্রেমীদের আকর্ষণ করে।
তবে, যেকোনো স্থানে ভ্রমণের আগে, সেই দেশের ভিসা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া উচিত।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক