জাপানে বুলেট ট্রেনের যাত্রা পথে সাপ! ব্যস্ততম রুটে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, দুর্ভোগে কয়েকশ যাত্রী
জাপানের দ্রুতগতির ট্রেন পরিষেবা, যা ‘শিনকানসেন’ নামে পরিচিত, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে বুধবার এক বিরল ঘটনা ঘটেছে। টোকিও এবং ওসাকার মধ্যে চলাচলকারী এই রুটে একটি বিশাল সাপ বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে কয়েকশ’ যাত্রী আটকা পড়েন।
জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটে মায়িবা এবং গিফু-হাশিমার মধ্যবর্তী স্টেশনের কাছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় এক মিটার লম্বা একটি সাপ বিদ্যুতের খুঁটিতে উঠে যায় এবং পরে বিদ্যুতের তারের ওপর পড়লে এই বিভ্রাট সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে। তবে ট্রেনের ভেতরে আলো এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু ছিল।
জাপানে বর্তমানে ‘গোল্ডেন উইক’ চলছে, যা একটি দীর্ঘ সরকারি ছুটির সময়। এই সময়ে বহু মানুষ তাদের বাড়ি ফেরে এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়। এছাড়াও, ওসাকা এক্সপো ২০২৫-এর কারণেও এই সময়ে মানুষের আনাগোনা অনেক বেশি থাকে। এই পরিস্থিতিতে এমন ঘটনার কারণে অনেক যাত্রী দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।
একজন যাত্রী, যিনি ঘটনার সময় ট্রেনে ছিলেন, তিনি জানান, “আমি মাসে কয়েকবার শিনকানসেনে ভ্রমণ করি, কিন্তু বিদ্যুতের কারণে এমন অচলাবস্থা এই প্রথম দেখলাম।”
এই রুটে প্রতিদিন প্রায় ৩৭0টির বেশি ট্রেন চলাচল করে এবং গড়ে ৪ লক্ষ ৩০ হাজার যাত্রী এই পথে ভ্রমণ করেন। ঘণ্টায় ২৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে ছুটতে সক্ষম এই ট্রেনগুলি টোকিও থেকে ওসাকা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে দেয়।
উল্লেখ্য, শিনকানসেন পরিষেবা জাপানে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ হিসেবে পরিচিত। এর আগে, ২০১৪ সালে টোকিও অলিম্পিকের প্রাক্কালে এই রুটের যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত যাত্রী নিরাপত্তা ও সময়ানুবর্তিতার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তবে, এর আগেও সাপ বা অন্য কোনো কারণে শিনকানসেনের যাত্রা বিঘ্নিত হয়েছে। গত বছর এপ্রিলে একটি ট্রেনে একটি সাপ পাওয়া গিয়েছিল, যার কারণে প্রায় ১৭ মিনিটের মতো বিলম্ব হয়েছিল। ২০০৯ সালেও বিদ্যুতের তারে সাপ ওঠায় টোকিও ও ফুকুসিমা অঞ্চলের মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান