ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ জয়লাভ করল চরম ডানপন্থী দল ‘রিফর্ম ইউকে’। দলটির নেতা নাইজেল ফ্যারেজের নেতৃত্বে রনকর্নে এবং হেলসবি আসনে মাত্র ছয় ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন সারা পোচিন।
স্থানীয় নির্বাচনে এই জয় তাদের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত কয়েক মাসের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে।
এই নির্বাচন ছিল ক্ষমতাসীন লেবার সরকারের জনসমর্থনের একটি পরীক্ষা।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচনে লেবার এবং প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি উভয়কেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতে পারে।
এর কারণ হিসেবে ভোটারদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন এবং বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে অসন্তোষের কথা উল্লেখ করা হচ্ছে।
রনকর্নের এই জয়ের ফলে, রিফর্ম ইউকে-র পার্লামেন্টে মোট আসনের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচে।
গত বছর অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে দলটি প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
বর্তমানে বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, তাদের জনপ্রিয়তা লেবার এবং কনজারভেটিভ পার্টির কাছাকাছি পৌঁছেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ২০২৯ সালের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে তারা কনজারভেটিভ পার্টিকে টপকে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল হওয়ার চেষ্টা করবে।
নির্বাচনে রিফর্ম ইউকে-র এই সাফল্যের কারণ হিসেবে অভিবাসন নীতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সরকারি অপচয় কমানোর প্রতিশ্রুতিকে অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
দলটির এই ধরনের প্রতিশ্রুতি শ্রমিক শ্রেণির ভোটারদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।
অন্যদিকে, মধ্যপন্থী লিবারেল ডেমোক্র্যাটরাও তাদের সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছে, বিশেষ করে ধনী এবং সামাজিক দিক থেকে উদার ভোটারদের মধ্যে।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ নির্বাচনের ফলাফলকে দলের জন্য কঠিন পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
কারণ, এই অঞ্চলে ২০২১ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি ভালো ফল করেছিল।
সেসময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্বে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কর্মসূচির কারণে তাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইন মেরির অধ্যাপক টিম বেলের মতে, কনজারভেটিভ এবং রিফর্ম ইউকে-র মধ্যে এখন যুক্তরাজ্যের রাজনীতির ডানপন্থীদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াই চলছে।
ফ্যারেজের দল শ্রমিক শ্রেণির ভোটারদের আকৃষ্ট করে লেবার পার্টির জন্যও একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন