স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে, মানুষ এখন শরীরচর্চার দিকে ঝুঁকছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। শুধু শহরে নয়, গ্রামগঞ্জেও এখন দৌড়বিদদের আনাগোনা বাড়েছে।
আর এই দৌড়কে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে এক নতুন ধরনের ভ্রমণের ধারণা, যা ‘রানিং ভ্যাকেশন’ বা দৌড়ের ছুটি নামে পরিচিত। খেলাধুলা এবং ভ্রমণের এই যুগলবন্দী এখন অনেকের কাছেই প্রিয় একটি বিষয়।
সাধারণত, এই ধরনের ছুটিতে ভ্রমণকারীরা কোনো নতুন জায়গায় যান এবং সেখানকার সুন্দর পরিবেশে দৌড়ান। এতে একদিকে যেমন ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করা যায়, তেমনই শরীরচর্চাটাও হয়ে যায়।
যারা ফিটনেস ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই ধরনের ছুটি দারুণ আকর্ষণীয়। বিভিন্ন ট্রাভেল কোম্পানি এখন এই ধরনের ভ্রমণের আয়োজন করছে। এমনকি, যারা নিয়মিত দৌড়ান, তারাও এখন দলবদ্ধভাবে বিভিন্ন স্থানে দৌড়ানোর পরিকল্পনা করছেন।
এই দৌড় প্রতিযোগিতার একটি বড় উদাহরণ হলো বুদাপেস্টের জেনারেল নাইট রান। রাতের বেলা এই দৌড় প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বহু মানুষ অংশ নেয়।
এটি হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের কেন্দ্র দিয়ে যায়, যা শহরটিকে ভিন্ন রূপে উপস্থাপন করে। এই ধরনের আয়োজন শুধু শারীরিক সক্ষমতা বাড়ায় না, বরং নতুন একটি গন্তব্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দৌড় আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়, এবং ঘুমের মান উন্নত করে। দৌড়ের সময় শরীরে এমন কিছু রাসায়নিক নির্গত হয় যা মানসিক শান্তির অনুভূতি এনে দেয়, যা উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।
এই ধরনের ছুটিতে যোগ দেওয়ার আগে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। দৌড়ের জন্য উপযুক্ত জুতো এবং পোশাক নির্বাচন করা অপরিহার্য। এছাড়াও, দৌড়ের আগে শরীরকে গরম করা এবং পরে স্ট্রেচিং করা জরুরি।
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি এই ধরনের ভ্রমণের পরিকল্পনা করছে। কেউ কেউ ইউরোপের বিভিন্ন শহরে দৌড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছে, আবার কেউ আল্পাইন অঞ্চলে দৌড়ানোর ব্যবস্থা করছে।
এই ধরনের ভ্রমণে দলবদ্ধভাবে দৌড়ানোর ফলে একটি কমিউনিটি তৈরি হয়, যা ভ্রমণকে আরও আনন্দদায়ক করে তোলে।
বাংলাদেশেও এখন স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ঢাকার হাতিরঝিল, গুলশান লেক সহ বিভিন্ন স্থানে এখন অনেককে দৌড়াতে দেখা যায়।
ভবিষ্যতে হয়তো, আমাদের দেশেও এমন দৌড় কেন্দ্রিক ভ্রমণের ধারণা আরও জনপ্রিয় হবে, যা ভ্রমণ এবং সুস্থ জীবনের এক দারুণ সমন্বয় ঘটাবে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক