বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা কমে যায়, এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এক পায়ে দাঁড়িয়ে ১০ সেকেন্ড থাকার ক্ষমতা থাকলে, আপনার শরীর হয়তো আপনাকে সুস্থ থাকারই ইঙ্গিত দিচ্ছে!
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা একজন মানুষের বয়স কত দ্রুত বাড়ছে, তা জানান দিতে পারে, এমনকি শারীরিক শক্তি বা হাঁটার গতির থেকেও বেশি নির্ভরযোগ্যভাবে।
আপনি যদি এক পায়ে ১০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীর এখনো যথেষ্ট কর্মক্ষম আছে। তবে, যদি এই কাজটি করতে অসুবিধা হয়, তবে এখনই সময় সতর্ক হওয়ার।
কারণ, শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা কমে গেলে, তা স্নায়ু দুর্বলতা, মস্তিষ্কের সমস্যা এমনকি অন্যান্য রোগেরও ইঙ্গিত দিতে পারে। ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, পারকিনসন’স এবং আলঝাইমার্সের মতো রোগগুলোও ধীরে ধীরে শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।
আসলে, শরীরের ভারসাম্য রক্ষার কাজটি বেশ জটিল। এতে আমাদের চোখ, কান, পেশী এবং মস্তিষ্কের সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন হয়।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে চল্লিশের পর থেকে, এই প্রক্রিয়াগুলোতে ধীরে ধীরে দুর্বলতা আসতে শুরু করে। এর ফলে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা কমে যায় এবং সামান্য কারণেই পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি।
এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার মতো সাধারণ ব্যায়ামের মাধ্যমেও এই ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব। এছাড়াও, দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমেও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করা যেতে পারে।
যেমন, হাঁটাচলার সময় আশেপাশে খেয়াল রাখা, সিঁড়ি দিয়ে সাবধানে ওঠা-নামা করা ইত্যাদি।
শারীরিক কার্যকলাপের অভাব শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা কমার অন্যতম প্রধান কারণ।
তাই, প্রতিদিন কিছু সময় শরীরচর্চা করা প্রয়োজন। যারা বসে কাজ করেন, তাদের জন্য নিয়মিত বিরতিতে উঠে হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করা জরুরি।
যারা বয়স্ক, তারা তাদের দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই ভারসাম্য রক্ষার ব্যায়ামগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
যেমন— নামাজ পড়ার সময়, উঠা-বসা বা ঝুঁকে কাজ করার সময় শরীরের ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করা।
নিয়মিত শরীরচর্চা এবং সচেতনতার মাধ্যমে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব।
তাই, আজ থেকেই চেষ্টা করুন আপনার শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্থ জীবন যাপন করতে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক