দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা: নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের শপথ, নির্বাচনের প্রস্তুতি
গত কয়েক মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা লেগেই আছে। এরই মধ্যে, দেশটির তৃতীয় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন শিক্ষামন্ত্রী লি জু-হো।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হান ডক-সু আকস্মিকভাবে আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেওয়ায় এই পরিবর্তন আসে। হান ডক-সুকে অভিশংসিত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের স্থলাভিষিক্ত করার জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রী লি জু-হো শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের অভিশংসনের পর হান ডক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এর আগে ইউন সামরিক আইন জারির ঘোষণা দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে বাতিল হয়ে যায়।
হান নিজেও অবশ্য পরে অভিশংসিত হন। এরপর অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মোক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে, আগামী ৩ জুনের নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিয়ুংয়ের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দিয়েছে। যদি নির্বাচনের আগে তাঁর দোষ প্রমাণিত হয়, তবে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হান ডক-সুর নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। তিনি ক্ষমতা সীমিত করা এবং ভারসাম্য রক্ষার জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
তবে ডেমোক্রেটিক পার্টি হান ডক-সুর এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে এবং তাঁর প্রতি জনগণের প্রতি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনেছে। দলটির মুখপাত্র নোহ জং-মিয়ন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হানকে সতর্ক করছি। জনগণের জন্য কাজ করার মিথ্যা অজুহাত দিয়ে আপনার ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা গোপন করবেন না।”
দক্ষিণ কোরিয়ার এই রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে নির্বাচনের ফলাফল কী হয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা