চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) বাজার বিশ্ব জয় করতে প্রস্তুত। সাংহাই অটো শো’তে এর ঝলক দেখা গেছে, যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইভি’র সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছিল চীনা কোম্পানিগুলো। এই শিল্পে চীন যে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।
আমাদের দেশের পাঠকদের জন্য সেই খবর পরিবেশন করা হলো।
গত কয়েক বছরে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার দ্রুত বেড়েছে। শুধু চীনেই নয়, বিশ্বজুড়ে এই গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। সাংহাইয়ে অনুষ্ঠিত অটো শো’তে এর প্রমাণ মিলেছে।
যেখানে নামী-দামী সব চীনা প্রস্তুতকারক তাদের নতুন মডেলের ইভি প্রদর্শন করেছে। ফাইভ-জি প্রযুক্তি, স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং সিস্টেম এবং দ্রুত চার্জিংয়ের মতো অত্যাধুনিক সব সুবিধা নিয়ে তৈরি হয়েছে এই গাড়িগুলো।
বর্তমানে চীনের বাজারে BYD, Xiaomi এবং Nio-এর মতো কোম্পানিগুলো শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। এমনকি BYD, টেসলার মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিকেও পেছনে ফেলেছে।
চীনের বাজারে চীনা ব্র্যান্ডের গাড়ির চাহিদা বাড়ছে, যা একসময় ছিল কল্পনাতীত। বর্তমানে চীনের বাজারে প্রায় ৬০ শতাংশ ইভি’র বাজার তাদের দখলে।
চীন সরকারের নীতি এবং সহায়তার কারণে এই সাফল্যের পেছনে অন্যতম কারণ। তারা এই শিল্পকে ভর্তুকি দিয়েছে এবং ব্যাটারি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহে মনোযোগ দিয়েছে।
এর ফলস্বরূপ, BYD-এর মতো কোম্পানিগুলো উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের তৈরি ব্যাটারি মাত্র পাঁচ মিনিটে ২৫০ মাইল পর্যন্ত চলতে পারে।
তবে, চীনের এই সাফল্যের পথে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। একদিকে যেমন অভ্যন্তরীণ বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা, তেমনই রয়েছে বিদেশি বাণিজ্য বাধা। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চীনের ইভি’র ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নও চীনা ইভি’র ভর্তুকি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে, চীন তাদের বাজারের বাইরেও অন্য দেশে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে চাইছে। তারা ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের গাড়ি রপ্তানি শুরু করেছে।
থাইল্যান্ডে BYD-এর গাড়ির জনপ্রিয়তা বাড়ছে, যা তাদের সফলতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
চীনের এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তাদের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা। গাড়ির ভেতরের বিন্যাস, আকর্ষণীয় ডিজাইন এবং সাশ্রয়ী দাম ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে।
এছাড়াও, চীনা সরকার এই শিল্পকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যা তাদের দ্রুত উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ চলছে, তবে চীনের ইভি প্রস্তুতকারকরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। তারা ইতিমধ্যেই বিকল্প বাজার খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
তাদের লক্ষ্য হলো, বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করা।
চীনের এই উত্থান বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রসার আমাদের দেশেও বাড়ছে।
চীনা কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি আমাদের দেশের বাজারের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন