ফ্লোরিডার উপকূলীয় অঞ্চলে শক্তিশালী স্রোতের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর। এই সতর্কবার্তার মূল বিষয় হলো—সাঁতার কাটার সময় সমুদ্রের বিপজ্জনক স্রোত সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
এই ধরনের স্রোতকে ‘রিপ কারেন্ট’ বলা হয়। জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ ফ্লোরিডার কিছু অঞ্চল—যেমন মায়ামি, বোকা র্যাটন, ওয়েস্ট পাম বিচ, কোরাল স্প্রিংস এবং পম্পানো বিচ-এ ‘রিপ কারেন্ট’-এর ঝুঁকি বেশি।
এছাড়া পেনসাকোলা এবং টল্লাহাসিতেও এই ধরনের স্রোতের সম্ভবনা রয়েছে।
রিপ কারেন্ট হলো জলের সংকীর্ণ, শক্তিশালী প্রবাহ, যা সাঁতারুদেরকে দ্রুত সমুদ্রের গভীরে টেনে নিয়ে যেতে পারে। ওপর থেকে দেখলে এই স্রোত সহজেই বোঝা যায়।
কিন্তু সাঁতার কাটার সময় অসচেতন থাকলে, এতে আটকা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত, ঘূর্ণিঝড় বা টর্নেডোর চেয়েও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এই রিপ কারেন্টের কারণে।
তাই সাঁতার কাটার সময় সতর্ক থাকাটা খুবই জরুরি।
জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর সাঁতারুদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে। তাদের মতে, সম্ভব হলে লাইফগার্ড আছে এমন সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটতে যাওয়া উচিত।
যদি কোনো সাঁতারু রিপ কারেন্টে আটকা পড়েন, তাহলে ঘাবড়ে না গিয়ে প্রথমে শান্ত থাকতে হবে। স্রোতের বিপরীতে সাঁতার কাটার চেষ্টা করা উচিত নয়, কারণ এতে দ্রুত শক্তি ক্ষয় হয়।
বরং, সমুদ্রের পাড়ের দিকে সমান্তরালভাবে সাঁতার কাটতে হবে, যতক্ষণ না স্রোতের টান থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এরপর স্রোত থেকে দূরে সরে এসে পাড়ের দিকে সাঁতার কাটার চেষ্টা করতে হবে।
যদি পাড়ে পৌঁছানো কঠিন হয়, তাহলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে বা হাত নাড়তে হবে।
ফ্লোরিডার এই ঘটনা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। বাংলাদেশেরও রয়েছে বিশাল সমুদ্র উপকূল এবং অসংখ্য নদ-নদী।
বর্ষাকালে এইসব নদ-নদীর স্রোত অনেক সময়ই বেশ শক্তিশালী থাকে। তাই, সাঁতার কাটার সময় আমাদেরও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সাঁতার কাটার আগে স্থানীয় পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। সম্ভব হলে অভিজ্ঞ সাঁতারুর সঙ্গে যাওয়া উচিত এবং অবশ্যই লাইফগার্ড আছে এমন স্থানে সাঁতার কাটা উচিত।
এছাড়াও, সাঁতার না জানলে অবশ্যই প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে সাঁতার শিখতে হবে। মনে রাখতে হবে, অসাবধানতা যেকোনো সময় বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে।
তথ্য সূত্র: ট্র্যাভেল এন্ড লিজার