ডিমের বাজারে ট্রাম্পের ভবিষ্যদ্বাণী: অবশেষে কি সত্যি হল?
যুক্তরাষ্ট্রে ডিমের দাম নিয়ে বেশ কয়েক মাস ধরেই আলোচনা চলছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে ডিমের দাম কমছে।
যদিও, আগে তার এই কথাগুলো তথ্যের সঙ্গে মিল ছিল না, কিন্তু সম্প্রতি বাজারে আসা হিসাব বলছে ভিন্ন কথা। পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, ট্রাম্পের সেই ‘মিথ্যা’ দাবিই যেন অবশেষে সত্যি হতে চলেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো (Bureau of Labor Statistics) থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ডিমের দাম কমেছে ১২.৭ শতাংশ।
১৯৮৪ সালের পর, এটিই ডিমের দামের সবচেয়ে বড় পতন। শুধু তাই নয়, ধারণা করা হচ্ছে, এই মাসের শেষেও দাম আরও কমতে পারে।
দেশটির কৃষি বিভাগ (USDA) জানিয়েছে, বর্তমানে এক ডজন সাদা ডিমের দাম প্রায় ৩.৩০ ডলার। যা এক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রায় ৬৯ সেন্ট কম।
বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে, এই ডিমের দাম প্রায় ৩৬০ টাকার কাছাকাছি।
গত কয়েক মাস ধরে বার্ড ফ্লু’র কারণে ডিম উৎপাদনকারী মুরগির ব্যাপক হারে মৃত্যু হওয়ায় ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়।
এর ফলে গত পাঁচ মাস এবং তার আগের ১৯ মাসের মধ্যে ১৭ মাস জুড়েই ডিমের দাম বেড়েছিল।
তবে, এই দাম কমার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। ডিমের চাহিদা কমে যাওয়া এবং বার্ড ফ্লু’র প্রকোপ কিছুটা হ্রাস পাওয়ায় এমনটা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি পুরনো মন্তব্যের কথা মনে আসে। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, তার প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপের কারণে ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে।
যদিও, সেই সময় ডিমের দাম কমার কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ ছিল না। বরং, বাজারে দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম কমার বিষয়টি হয়তো ট্রাম্পের নজরে এসেছিল।
কারণ, খুচরা বাজারে দাম কমতে সময় লাগে। মুদি দোকানগুলো আগের লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার জন্য দাম কমাতে কিছুটা সময় নেয়।
উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ চেইন শপ ‘কস্টকো’ (Costco)-এর মতো দোকানগুলোতে ডিমের সরবরাহ সীমিত করা হয়েছিল।
ডিমের দামের এই উত্থান-পতনের ঘটনা বিশ্ব অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ।
খাদ্যপণ্যের দাম কিভাবে বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে, তা এই ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়।
বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময়ে খাদ্যপণ্যের দামের পরিবর্তন দেখা যায়, যা বাজারের চাহিদা ও সরবরাহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, এবং আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল।
তথ্যসূত্র: সিএনএন