প্রায় চার দশক ধরে ব্রিটিশ কারাগারে বন্দী থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেলেন ৬৮ বছর বয়সী পিটার সুলিভান।
১৯৮৬ সালে ডায়ান সিন্ডাল নামের এক তরুণীর হত্যাকাণ্ডের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছিল তাকে। সম্প্রতি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সুলিভানের কোনো সম্পর্ক ছিল না।
আদালতের রায়ে তার সাজা বাতিল করা হয়েছে।
১৯৮৬ সালে লিভারপুলের কাছে বেবিংটন এলাকায় ২১ বছর বয়সী ডায়ান সিন্ডাল খুন হন। ঘটনার এক মাস পরেই গ্রেফতার করা হয় পিটার সুলিভানকে।
১৯৮৭ সালে, মাত্র ৩০ বছর বয়সে, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। এরপর বেশ কয়েকবার আপিল করলেও তার সাজা বহাল ছিল।
দীর্ঘদিন কারাগারে কাটানোর পরও সুলিভান কোনো ক্ষোভ বা তিক্ততা প্রকাশ করেননি।
আদালতের বাইরে তার আইনজীবী পাঠ করা এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “আমি এমন একটি অপরাধের জন্য আমার স্বাধীনতা হারিয়েছি, যা আমি করিনি।”
বিচার বিভাগের এই ভুল নিঃসন্দেহে একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
আদালতে যখন সুলিভানের সাজা বাতিলের ঘোষণা করা হয়, তখন তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তার আইনজীবী জানান, এটি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে বিচার বিভাগের চরম ব্যর্থতার একটি উদাহরণ, যেখানে একজন মানুষ এত দীর্ঘ সময় ধরে অন্যায়ভাবে কারাবন্দী ছিলেন।
সুলিভানের মামলা নতুন করে খতিয়ে দেখার জন্য ক্রিমিনাল কেসেস রিভিউ কমিশন নামে একটি স্বাধীন সংস্থা গঠিত হয়।
তারা ঘটনার সময় সংগৃহীত নমুনা থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করে এবং জানতে পারে যে, ডিএনএ প্রোফাইলটি সুলিভানের সাথে মেলে না।
এরপরই মামলাটি লন্ডনের আপিল আদালতে পাঠানো হয়।
যেহেতু নতুন ডিএনএ প্রমাণ পাওয়া গেছে, তাই প্রসিকিউশন সার্ভিসও সুলিভানের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো ভিত্তি খুঁজে পায়নি।
তারা জানায়, এই নতুন প্রমাণ সুলিভানের বিরুদ্ধে দেওয়া রায়কে সম্পূর্ণরূপে সন্দেহের চোখে ফেলে।
বর্তমানে পুলিশ ডায়ান সিন্ডালের আসল হত্যাকারীকে খুঁজে বের করার জন্য নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা