ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য অনুযায়ী, ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের প্রস্তাব দিয়েছে। সম্প্রতি কাতারের দোহায় এক ব্যবসায়িক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
ট্রাম্প বলেন, ভারত বিশ্বের অন্যতম উচ্চ শুল্কযুক্ত দেশ এবং সেখানে ব্যবসা করা কঠিন। তবে তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো শুল্ক আরোপ করতে রাজি হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে তা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে সহায়তা করবে। যদিও ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতের অবস্থান দশম।
বাণিজ্য ঘাটতির দিক থেকেও যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে রয়েছে। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্র যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে, তার থেকে প্রায় ৪ হাজার ৫৭ কোটি ডলার (প্রায় ৫,১২০ কোটি টাকা) কম রপ্তানি করেছে।
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের উচ্চ শুল্ক নিয়ে সমালোচনা করে আসছেন। বিশেষ করে, ভারতের গাড়ির ওপর ৭০ শতাংশ, কিছু নেটওয়ার্কিং সরঞ্জামের ওপর ২০ শতাংশ এবং চাল আমদানির ওপর ৮০ শতাংশ শুল্কের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
এছাড়া, ভারতের ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াকেও তিনি অনেক সময় কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন।
যদি ভারত সত্যিই শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের প্রস্তাব দেয়, তবে তা যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি বড় সুযোগ তৈরি করবে। কারণ, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্প যখন শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, তখন তিনি একাধিকবার ভারতের কথা উল্লেখ করেছিলেন।
তিনি ভারতের ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স এবং ডিজিটাল পরিষেবা কর নিয়েও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের বিষয়টি চূড়ান্ত হলে, তা বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বাণিজ্য নীতিতে এটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারতের বাণিজ্য বাধাগুলো দূর হলে, দেশটি থেকে বছরে অন্তত ৫৩০ কোটি ডলার (প্রায় ৫৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা) বেশি পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
তবে, বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের বাণিজ্য চুক্তি হলে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।
কারণ, এতে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আরও বাড়লে, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমে যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন