মেভিলি, নিউ ইয়র্ক (এপি) – বিশ্ববিখ্যাত লেখক সালমান রুশদিকে ছুরিকাঘাত করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়া হাদি মাতারের সাজা ঘোষণা হতে যাচ্ছে। ২০২২ সালে নিউ ইয়র্কের একটি আলোচনা সভায় এই হামলার ঘটনা ঘটেছিল। শুক্রবার এই সাজার ঘোষণা করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২৭ বছর বয়সী হাদি মাতারকে হত্যার চেষ্টা ও গুরুতর আঘাতের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনার জেরে লেখক রুশদি এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। চাউতাকোয়া কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি জেসন স্মিথ জানিয়েছেন, তিনি আসামীর সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং মঞ্চে থাকা অপর এক ব্যক্তির ওপর হামলার জন্য ৭ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করবেন। একই ঘটনায় দুই জন আহত হওয়ায় উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নিউ জার্সির বাসিন্দা হাদি মাতার, ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ উপন্যাসের জন্য রু রুশদির বিরুদ্ধে জারি হওয়া ফতোয়ার কারণে এই হামলা চালায়। ফেডারেল প্রসিকিউটরদের মতে, মাতারের ধারণা ছিল, লেবানন-ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এই ফতোয়ার সমর্থন করে। ২০০৬ সালের এক ভাষণে হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহও এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি বিতর্কিত ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ প্রকাশের পর রুশদির বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেন। এই উপন্যাসটি কিছু মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে ধর্মীয় অবমাননাকর হিসেবে বিবেচিত হয়। এর জেরে রুশদি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। তবে ইরান সরকার ফতোয়া কার্যকর না করার ঘোষণা দিলে তিনি গত ২৫ বছর ধরে অবাধে চলাফেরা করছিলেন।
আদালতে পেশ করা ভিডিওতে দেখা যায়, হাদি মাতার মঞ্চে বসা রুশদির দিকে পেছন থেকে এগিয়ে যান এবং ছুরি দিয়ে তাঁর ওপর একাধিকবার হামলা চালান। ঘটনার আকস্মিকতায় উপস্থিত দর্শক হতভম্ব হয়ে চিৎকার শুরু করেন। রুশদি আত্মরক্ষার্থে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু হামলাকারী তাঁকে এলোপাথাড়িভাবে আঘাত করতে থাকে। পরে উপস্থিত লোকজন এসে তাদের দু’জনকে আলাদা করে।
মাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত অভিযোগেও একটি ফেডারেল ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে এই হামলার পেছনের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। প্রথম বিচারের রায়ে জুরিরা দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন