যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ খুচরা বিক্রেতা, টার্গেটের বিক্রি কমেছে, যা ২০২৩ সালের পুরো বছরের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি বিক্রি কমেছে এই কোম্পানির।
একদিকে যেমন বিশ্ব অর্থনীতির মন্দা এবং শুল্কের প্রভাব নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, তেমনই অন্যদিকে, বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণেও এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম প্রান্তিকে তাদের বিক্রি ২.৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৩.৮৫ বিলিয়ন ডলারে। গত বছর একই সময়ে এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ২৪.৫৩ বিলিয়ন ডলার।
ওয়াল স্ট্রিট-এর বিশ্লেষকরা ২৪.২৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রির পূর্বাভাস দিলেও, টার্গেট সেই লক্ষ্য পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, টার্গেট কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালের জন্য তাদের বার্ষিক বিক্রয় পূর্বাভাসও কমিয়েছে।
মার্চ মাসে তারা যেখানে ১ শতাংশ বৃদ্ধির আশা করেছিল, সেখানে এখন তারা বিক্রয়ে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখছে।
শুধু বিক্রি হ্রাসই নয়, এই পরিস্থিতিতে কোম্পানির মুনাফাও কমেছে। শেয়ার প্রতি আয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে ৭ থেকে ৯ ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৩ সালে তাদের শেয়ার প্রতি আয় হতে পারে ৮.৩৪ ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান কারণ হলো, ভোক্তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বৃদ্ধি।
এছাড়াও, দোকানের বিক্রি কমে যাওয়া, অনলাইন ব্যবসার কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ না হওয়া এবং বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে বিতর্কও এই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। উদাহরণস্বরূপ, টার্গেট তাদের কিছু ‘বৈচিত্র্য, ইক্যুইটি ও অন্তর্ভুক্তি’ বিষয়ক কার্যক্রম হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা কিছু গ্রাহকের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে।
এই সংকট মোকাবিলায় টার্গেট বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তারা তাদের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনেছে এবং বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য নতুন কৌশল তৈরি করছে।
গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে তারা ১ ডলার থেকে শুরু করে স্বল্প মূল্যের প্রায় ১০ হাজার নতুন পণ্য বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে।
কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্রায়ান কর্নেল এক বিবৃতিতে জানান, “আমরা এই ফলাফলে সন্তুষ্ট নই এবং দ্রুত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের দোকানে গ্রাহক আনা এবং ওয়েবসাইটে ভিজিটর বাড়ানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
বর্তমানে টার্গেটের প্রায় ২,০০০ এর বেশি দোকান রয়েছে এবং এতে প্রায় ৪ লক্ষাধিক কর্মী কাজ করেন।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, টার্গেটের এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ওয়ালমার্ট ভালো ফল করেছে। ওয়ালমার্ট গত সপ্তাহে শক্তিশালী বিক্রয়ের ঘোষণা দিয়েছে।
ওয়ালমার্ট জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যে কিছু পণ্যের দাম বাড়িয়েছে এবং আসন্ন গ্রীষ্মকালে স্কুল খোলার মৌসুমে আরও দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে।
বর্তমানে ১ মার্কিন ডলারের বিনিময় মূল্য বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১৭ টাকা (মে, ২০২৪)।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস