বিখ্যাত শিল্পী ডেভিড হকের আর্টের শুরুর দিকের কাজগুলো নিয়ে লন্ডনে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রদর্শনীতে হকের শিল্পী জীবনের প্রথম দিকের কিছু কাজ দর্শকদের জন্য উন্মোচন করা হয়েছে, যা তার পরবর্তী সময়ের পরিচিত শৈলী থেকে বেশ ভিন্ন।
“ইন দ্য মুড ফর লাভ: হকের লন্ডন, ১৯৬০-১৯৬৩” শীর্ষক এই প্রদর্শনীটি বর্তমানে লন্ডনের হজলিত হল্যান্ড-হিবার্ট গ্যালারিতে চলছে এবং আগামী ১৮ই জুলাই পর্যন্ত এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ডেভিড হকের নাম শুনলেই আমাদের চোখে ভাসে উজ্জ্বল রঙের ক্যানভাসে আঁকা ছবি, যেখানে সাধারণত সুইমিং পুল অথবা ক্যালিফোর্নিয়ার মনোরম দৃশ্য দেখা যায়। কিন্তু এই প্রদর্শনীতে রয়েছে হকের তরুণ বয়সের কিছু কাজ, যখন তিনি শিল্পী হিসেবে নিজের স্থান খুঁজছিলেন।
এই সময়ের কাজগুলোতে বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারার প্রভাব স্পষ্ট, যেখানে তীব্র আবেগ, অস্থিরতা এবং পরীক্ষামূলকতার ছোঁয়া রয়েছে। প্রদর্শনীটি যেন হকের শিল্পী জীবনের একটি ভিন্ন দিক উন্মোচন করে, যা দর্শকদের পরিচিত হকের থেকে বেশ আলাদা।
প্রদর্শনীটি সাজানো হয়েছে হকের ছাত্রজীবনের কাজগুলো নিয়ে। এখানে দেখা যায়, তিনি কিভাবে বিভিন্ন শিল্পী এবং শিল্পের ধারা থেকে প্রভাবিত হয়েছিলেন।
বিশেষ করে, টুওম্বলি, বেকন, রাউশেনবার্গ এবং জ্যাসপার জনস-এর মতো শিল্পীদের কাজের প্রভাব তার ওপর ছিল। হকের এই সময়ের কাজগুলোতে যৌনতা এবং ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
ছবিগুলোতে পুরুষদেহের বিভিন্ন চিত্র এবং সমকামিতার সাহসী উপস্থাপনা দেখা যায়, যা সেই সময়ের শিল্পকলার প্রেক্ষাপটে বেশ উল্লেখযোগ্য।
এই প্রদর্শনী শুধু হকের শৈল্পিক বিবর্তনকেই তুলে ধরে না, বরং ১৯৬০-এর দশকের লন্ডনের শিল্পকলার পরিবেশকেও তুলে ধরে। সেই সময়কার ডেরেক বোশিয়ার, প্যাট্রিক কওফিল্ড এবং অ্যালেন জোন্সের মতো শিল্পীরাও তাদের নিজস্ব পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।
হকের কাজগুলো সেই সময়ের শিল্পকলার একটি প্রতিচ্ছবি, যেখানে তিনি নতুন কিছু করার চেষ্টা করছিলেন।
প্রদর্শনীটি হকের একজন শিল্পী হিসেবে গড়ে ওঠার প্রাথমিক পর্যায়কে তুলে ধরে। এখানে তার শৈল্পিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং বিভিন্ন প্রভাবের সংমিশ্রণ দেখা যায়।
এই প্রদর্শনীতে হকের কাজের যে দিকটি উন্মোচন করা হয়েছে, তা দর্শকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে তারা একজন কিংবদন্তি শিল্পীর জীবনের শুরুর দিকের সংগ্রাম এবং তার শৈল্পিক বিবর্তনের সাক্ষী হতে পারবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান