**আমেরিকান আইনজীবী কাইল ফ্রেজারের ‘সারভাইভার’ জয়: কৌশল আর অধ্যবসায়ের গল্প**
প্রতি বছরই সারা বিশ্বে টেলিভিশনের পর্দায় অন্যতম জনপ্রিয় একটি রিয়েলিটি শো হলো ‘সারভাইভার’। যেখানে প্রতিযোগীরা প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করে।
সম্প্রতি, ‘সারভাইভার’-এর ৪৮তম সিজনের বিজয় মুকুট উঠেছে কাইল ফ্রেজারের মাথায়। এই আইনজীবী, যিনি এককালে শিক্ষকতাও করেছেন, ফিজিতে হওয়া এই প্রতিযোগিতায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পুরস্কার জিতেছেন।
কাইল ফ্রেজার, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া থেকে এসে বর্তমানে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে বসবাস করেন, বিচারকদের ভোটে ৫-২-১ ব্যবধানে অন্য প্রতিযোগীদের পরাজিত করে এই খেতাব জেতেন। ‘সারভাইভার’-এর মঞ্চে আসার আগে তিনি মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন, তাঁর প্রধান কৌশল হবে অন্যদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করা।
তিনি বলেছিলেন, “আমি হয়তো সরাসরি বিজয়ী হওয়ার কথা বলছি না, তবে জিতলে এমনভাবে জিততে চাই, যা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।”
ফ্রেজার শিক্ষাজীবন শেষ করে প্রথমে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি ল’ স্কুলে ভর্তি হন এবং আইন পেশায় যুক্ত হন।
শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা তাঁকে কঠিন পরিস্থিতিতেও মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সাহায্য করেছে। তাঁর ভাষায়, “আমি সবসময় চেষ্টা করেছি আমার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে, যদিও তাদের জন্য পড়াশোনা সবসময় মুখ্য ছিল না।”
প্রতিযোগিতার জন্য শারীরিক প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি জানান, শুরুতে তিনি শক্তি বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম করা শুরু করেন। কিন্তু পরে উপলব্ধি করেন, এখানে টিকে থাকার জন্য শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি প্রয়োজন মানসিক দৃঢ়তাও।
তাই তিনি তাঁর খাদ্য এবং ব্যায়ামের ধরনে পরিবর্তন আনেন। মানসিক প্রস্তুতির জন্য, ফ্রেজার ‘সারভাইভার’-এর পরিস্থিতিকে তাঁর দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করতেন।
কৌশলগত দিক থেকে দেখলে, কাইল ফ্রেজারের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ছিল তাঁর ‘আকর্ষণীয়’ ব্যক্তিত্ব। তিনি মনে করেন, অন্যদের সঙ্গে সহজে মিশে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁকে খেলাটিতে এগিয়ে রেখেছে।
তাঁর কথায়, “আমি ‘আকর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার করতে পছন্দ করি না, তবে আমি মানুষকে ভালোবাসি। আমি মনে করি, মানুষের প্রতি আমার এই আগ্রহ আমাকে সাহায্য করবে।
সম্ভবত, এটাই আমার দুর্বলতাও হতে পারে, কারণ আমি এক-একজনের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে বেশি মনোযোগ দেব।”
ব্যক্তিগত জীবনে কাইল বিবাহিত। ২০২৩ সালের এপ্রিলে তিনি তাঁর বাগদত্ত ম্যাগি টার্নারের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে তাঁদের সম্পর্কের কথা জানান।
এরপর তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
কাইল ফ্রেজারের এই জয় প্রমাণ করে, কঠোর পরিশ্রম, কৌশল এবং মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে যেকোনো প্রতিকূলতা জয় করা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: পিপল