টেক্সাসের স্যান আন্তোনিও শহরে অবস্থিত হোটেল এমা, যা এক সময়ের পুরনো একটি বিশাল বিয়ার তৈরির কারখানা ছিল, বর্তমানে বিলাসবহুল এক হোটেলে রূপান্তরিত হয়েছে। এই হোটেলটি শুধু থাকার জায়গাই নয়, বরং শহরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত এক আকর্ষণীয় স্থান।
যারা একটু ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা ভালোবাসেন, তাদের জন্য হোটেল এমা হতে পারে দারুণ একটি গন্তব্য।
হোটেল এমার নির্মাণশৈলী খুবই আকর্ষণীয়। পুরনো কারখানার বিভিন্ন সরঞ্জাম, যেমন – উন্মুক্ত নালীপথ, লোহার পাইপ, এবং পুনরুদ্ধার করা টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে, যা এর অন্দরসজ্জাকে এক বিশেষ রূপ দিয়েছে।
এখানে আসলে, অতিথিরা যেন এক ভিন্ন জগতে প্রবেশ করেন, যেখানে ইতিহাস আর আধুনিকতার এক দারুণ মিশ্রণ দেখা যায়।
হোটেলটি যে স্থানে অবস্থিত, সেই জায়গাটিরও রয়েছে এক দারুণ ইতিহাস। ১৮৮৩ সালে এখানে “পিয়ার্ল ব্রুইং কোম্পানি” প্রতিষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে, এই কোম্পানির মালিকানা নিয়ে ঘটেছিল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। মালিক অটো কোহলারের স্ত্রী এমা কোহলার, যিনি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গৃহবন্দী ছিলেন।
শোনা যায়, এরপর মালিকের জীবনে একাধিক নারীর আগমন ঘটেছিল, যা পরবর্তীতে এক হত্যাকাণ্ডের জন্ম দেয়। এই ঘটনার সাক্ষী হয়ে আজও হোটেলটি ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
হোটেল এমার প্রতিটি কক্ষে আরাম ও আতিথেয়তার ছোঁয়া রয়েছে। এখানে বিভিন্ন ধরনের কক্ষ রয়েছে, ক্লাসিক রুম থেকে শুরু করে দুই তলা বিশিষ্ট এমা কোহলার স্যুট পর্যন্ত, যেখানে অত্যাধুনিক সব সুবিধা বিদ্যমান।
প্রতিটি কক্ষের অন্দরসজ্জা খুবই রুচিশীল এবং আরামদায়ক। এখানকার আর্টেসিয়ান রুমগুলোতে আরামদায়ক বিছানা, নদীর দৃশ্য এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী পাওয়া যায়।
তাছাড়া, বাথরুমগুলোতে আরামদায়ক বাথটাব ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
হোটেল এমার রেস্তোরাঁগুলোতে নানা স্বাদের খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানকার ‘সাপার’ রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় নতুন আমেরিকান ঘরানার খাবার, যেখানে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয়।
সকালের নাস্তার মেনুতে ক্লাসিক খাবারের পাশাপাশি কিছু নতুনত্বও রয়েছে। রাতের খাবারের জন্য গ্রিল করা ঝিনুক অথবা গরুর মাংসের স্টেক-এর মতো বিশেষ খাবারগুলো বেশ জনপ্রিয়।
এছাড়া, ‘স্টার্নেওয়ার্থ’ নামক বার-এ বিভিন্ন ধরনের ককটেল উপভোগ করা যেতে পারে।
হোটেল এমার অতিথিদের জন্য আরও অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এখানে একটি লাইব্রেরি আছে, যেখানে স্থানীয় ইতিহাসবিদ শেরী ওয়াগনারের সংগ্রহ করা বই রয়েছে।
এছাড়া, রুফটপ পুল, ফিটনেস সেন্টার এবং বিনামূল্যে বাইকের ব্যবস্থা তো আছেই। কাছাকাছি সময়ে সান আন্তোনিও বোটানিক্যাল গার্ডেন, সান আন্তোনিও মিউজিয়াম অফ আর্ট এবং রুবি সিটি-র মতো স্থানগুলো ঘুরে আসা যেতে পারে।
হোটেল এমার অবস্থানও খুব সুবিধাজনক। এটি সান আন্তোনিও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় ১৫ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত।
যারা আশেপাশে ঘুরতে চান, তাদের জন্য পায়ে হেঁটে ঘোরারও সুযোগ রয়েছে।
হোটেল এমার রাতের বেলায় কক্ষের ভাড়া শুরু হয় প্রায় $৪৫৫ মার্কিন ডলার থেকে, যা বাংলাদেশি টাকায় (প্রায়) ৫০,০০০ টাকার সমান।
তবে এটি একটি আনুমানিক হিসাব, যা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার