স্পেনের একটি ছোট্ট শহর আলবা দে টোরমেসে কয়েক সপ্তাহ ধরে যেন মানুষের ঢল নেমেছিল। কারণটা ছিল খুবই বিশেষ—১৬ শতকের বিখ্যাত ক্যাথলিক সাধিকা, সেন্ট টেরিজা অফ অ্যাভিলার দেহাবশেষ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল।
খবর অনুযায়ী, প্রায় এক লক্ষ মানুষ এই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছিলেন। সেন্ট টেরিজা, যিনি আধ্যাত্মিক জগতের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র, তাঁর মৃত্যুর চার শতাব্দীরও বেশি সময় পরে, তাঁর পবিত্র দেহাবশেষ প্রদর্শিত হওয়ার ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
শেষবার ১৯১৪ সালে তাঁর দেহাবশেষ জনসাধারণের জন্য উন্মোচন করা হয়েছিল, যেখানে মানুষ একদিনের জন্য সাধ্বীকে শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছিল। এবার, ভক্তদের জন্য প্রায় দু’সপ্তাহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
আলবা দে টোরমেসের চার্চে সংরক্ষিত এই কফিনের ভেতর দেখা যায় সাধ্বীর কঙ্কাল, যা একটি বিশেষ পোশাকে আবৃত ছিল। শরীরের অন্যান্য অংশ, যেমন হৃদপিণ্ড, আলাদা স্থানে রাখা আছে।
এছাড়াও, তাঁর শরীরের কিছু অংশ, যেমন আঙুল, হাত এবং চোয়াল ইউরোপের বিভিন্ন চার্চে পবিত্র স্মারক হিসেবে সংরক্ষিত আছে। সেন্ট টেরিজা ছিলেন স্পেনের স্বর্ণযুগের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
তিনি ছিলেন একজন সংস্কারক এবং ধর্মীয় চিন্তাবিদ। তাঁর আধ্যাত্মিক চিন্তা ও ঈশ্বরের প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রকাশ আজও মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।
তাঁর লেখাগুলো আধ্যাত্মিকতার এক গভীর দৃষ্টান্ত হিসেবে আজও বিবেচিত হয়। এই প্রদর্শনীর সময় অনেক ভক্তের চোখে জল দেখা গেছে।
ভারতের কিছু সন্ন্যাসিনী, যারা এসেছিলেন, তাঁরাও কান্নায় ভেঙে পড়েন। ৭০ বছর বয়সী গ্রেগোরিয়া মার্টিন লোপেজ নামক এক বৃদ্ধা, যিনি চার্চের উঁচু স্থান থেকে সাধ্বীর কঙ্কাল দেখার চেষ্টা করছিলেন, তিনি বলেন, “আমার কাছে এই সাধ্বী এক বিশাল শক্তি।
যদি একে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে আমি বলতে পারব, আমি তাঁকে দেখেছি।” সেন্ট টেরিজার দেহাবশেষ দেখার এই বিরল সুযোগ নিঃসন্দেহে ভক্তদের জন্য ছিল এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এটি ছিল তাঁদের গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস