মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরিতে গর্ভপাতের ওপর পুনরায় স্থগিতাদেশ জারি করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। নভেম্বরে অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে রায় দিলেও, আদালতের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে এই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় বিচারকের আগের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এই স্থগিতাদেশ আনা হয়েছে। আদালতের নথি অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে এবং ফেব্রুয়ারিতে একজন জেলা বিচারক যে রায় দিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট মনে করে তাতে ভুল মানদণ্ড প্রয়োগ করা হয়েছিল।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ‘রো বনাম ওয়েড’ রায় বাতিল করার পর রাজ্যে গর্ভপাত প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
আদালত তার রায়ে জেলা জজ জেরি ঝাংকে আগের আদেশ বাতিল করতে এবং আদালতের দেওয়া মানদণ্ড ব্যবহার করে মামলার পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে। ঝাং-এর মতে, তিনি মূলত এই কারণে গর্ভপাত পুনরায় চালু করার অনুমতি দিয়েছিলেন যে আইনজীবীরা সম্ভবত মামলায় জিতবেন।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, গর্ভপাত পুনরায় চালু করার ফলে কোনো ক্ষতি হবে কিনা, তা প্রথমে বিবেচনা করা উচিত।
মিসৌরি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যান্ড্রু বেইলি এক বিবৃতিতে বলেছেন, “আজকের এই সিদ্ধান্ত নারী ও শিশুদের জন্য একটি বিজয়। এর মাধ্যমে গর্ভপাত প্রদানকারীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার মৌলিক প্রয়োজনীয়তাগুলো মেনে চলতে হবে।”
অন্যদিকে, প্ল্যানড প্যারেন্টহুড, যারা রাজ্যের একমাত্র গর্ভপাত ক্লিনিক পরিচালনা করে, তারা এই বিধিনিষেধকে গর্ভপাতের সুযোগ কমানোর উদ্দেশ্যে প্রণীত বলে মনে করে।
এমিলি ওয়েলস, প্ল্যানড প্যারেন্টহুড গ্রেট প্লেইনস-এর প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের কলাম্বিয়া এবং কানসাস সিটির ক্লিনিকে গর্ভপাতের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করতে হয়েছে।
ওয়েলস আরও বলেন, “আমরা এর আগেও মিসৌরিতে রোগীদের ফোন করে জানিয়েছি যে তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করা হয়েছে, কারণ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং রাজ্যের নতুন বিধিনিষেধ জারি হয়েছে।
মিসৌরির মানুষ গর্ভপাতের অধিকারের পক্ষে রায় দেওয়ার পরেও, পুনরায় এই পরিস্থিতিতে পড়তে হওয়ায় আমরা হতাশ।
অন্যদিকে, ক্যাম্পেইন লাইফ মিসৌরির পরিচালক স্যাম লি সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশে অত্যন্ত আনন্দিত।
তিনি বলেন, “এর অর্থ হলো আমাদের গর্ভপাত বিরোধী আইন, যার মধ্যে নারীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার জন্য অনেক সুরক্ষা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তা বহাল থাকবে।
উল্লেখ্য, মিসৌরি একমাত্র রাজ্য যেখানে ভোটাররা সরাসরি ব্যালটের মাধ্যমে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। যদিও, রাজ্যের রিপাবলিকান সরকার গর্ভপাত পুনরায় চালু করার অনুমতি দেওয়ার বিরুদ্ধে আদালতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে, ১২টি রাজ্যে গর্ভপাত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং আরও চারটি রাজ্যে প্রায় ছয় সপ্তাহের পর গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন