বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে আগামী কয়েক বছরে মারাত্মক তাপপ্রবাহ এবং চরম আবহাওয়ার পরিবর্তনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থা ও যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা নতুন করে রেকর্ড গড়তে পারে এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে নির্ধারিত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সীমাও অতিক্রম করতে পারে।
এই পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বিশ্ব উষ্ণতা বৃদ্ধির ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) অতিক্রম করার সম্ভাবনা প্রায় ৮৬ শতাংশ। এমনকি, এই দশকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)-এর বেশি বেড়ে যাওয়ারও সামান্য সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে।
উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি, বন্যা, খরা, দাবানল এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এই পরিবর্তনের ফলে মানুষের জীবনহানি ও স্বাস্থ্যগত সমস্যাও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের উপর। এতে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার প্রকোপ বাড়বে, ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষি উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এছাড়া, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খরা দেখা দিতে পারে এবং সুপেয় পানির সংকট আরও বাড়তে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে উপকূলের মানুষ।
আবহাওয়াবিদ ও বিজ্ঞানীরা বলছেন, এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক কারণেও পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলছে। তাঁরা সতর্ক করে বলেছেন, একবার তাপমাত্রা বাড়লে তা কমানো কঠিন হয়ে পড়ে এবং এটি নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে পরিণত হয়।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জনগণের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নতি এবং জলবায়ু সহনশীল জীবনযাত্রার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া।
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও পদক্ষেপের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস