বিয়ে একটি আনন্দময় অনুষ্ঠান, কিন্তু বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের খরচ বাড়ছে, যা অনেকের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পোশাক থেকে শুরু করে কেক, ফুল—সবকিছুতেই এই শুল্কের প্রভাব পড়ছে, যার ফলে বিয়ের আয়োজন আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
এমন পরিস্থিতিতে, অনেকেই প্রশ্ন করছেন, এই পরিস্থিতি কি বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে?
যুক্তরাষ্ট্রের কনে ক্রিস্টা ভাসকুয়েজ স্পেনের তৈরি একটি গাউন পরতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শুল্কের কারণে তাঁর স্বপ্নের পোশাকটির দাম ৩০০ ডলারের বেশি বেড়ে যায়। একইরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে সান দিয়েগোর অনলাইন কনটেন্ট ক্রিয়েটর অলিভিয়া সেভারের।
তাঁর বিয়ের কার্ড এবং অন্যান্য কাগজের সামগ্রীর দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে, কারণ এগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিয়ের বাজারে ব্যবহৃত বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে ফুল, কেক, পোশাক—সবকিছুর দাম বাড়ছে।
ফিনিক্সের কেক শিল্পী আরমানা খ্রিস্টানসন জানান, তাঁর ব্যবহৃত চকলেটের দাম ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। তাঁর মতে, এই পরিস্থিতিতে নতুন করে ব্যবসার পরিকল্পনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
কনেদের জন্য বিয়ের পোশাক প্রস্তুতকারকদেরও একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্রাইডাল রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বিয়ের পোশাক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ—লেইস, বোতাম, জিপার—এগুলোর অধিকাংশই চীন বা অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত ফুলের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে বিভিন্ন দেশ থেকে। কলম্বিয়া, ইকুয়েডর এবং নেদারল্যান্ডস থেকে প্রচুর ফুল আমদানি করা হয়।
শুল্কের কারণে ফুলের দামও বাড়ছে, যা কনেদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিয়ের আয়োজনে জড়িত বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ায় অনেক দম্পতি এখন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা বোধ করছেন। আগে যেখানে একটি বুকিং নিশ্চিত করতে ৪০ দিন সময় লাগত, এখন সেখানে ৭৩ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে।
এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে বিয়ে বাতিলও হচ্ছে।
যদিও এই ঘটনাগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে ঘটছে, তবে বিশ্বায়নের এই যুগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির পরিবর্তন যেকোনো দেশের বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশেও বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ—যেমন কাপড়, অলঙ্কার, বা সাজসজ্জার সরঞ্জাম—আমদানি করা হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুল্কের পরিবর্তন ঘটলে এসবের দাম বাড়ার সম্ভাবনা থাকে, যা বাংলাদেশের বিবাহ-বাজারকেও প্রভাবিত করতে পারে।
বিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক অনুষ্ঠান। এই ধরনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতিগুলো ভবিষ্যতে বিয়ের খরচ এবং সামগ্রিক আয়োজনে কেমন প্রভাব ফেলবে, সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস