যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি), তাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতির অংশ হিসেবেDiversity, Equity, and Inclusion (DEI) বিষয়ক একটি দপ্তর বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন সরকারের চাপ ও ফেডারেল গ্রান্টের (অনুদান) উপর সম্ভাব্য প্রভাবের কারণে এমন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।

এমআইটি কর্তৃপক্ষের ভাষ্যমতে, তারা এখনো তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের মানুষের অংশগ্রহণ ও তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে, এখন থেকে এই বিষয়ক কার্যক্রমগুলো সরাসরি বিভিন্ন বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

এই পরিবর্তনের ফলে, এমআইটি-র ইনস্টিটিউট কমিউনিটি অ্যান্ড ইক্যুইটি অফিস (আইসিইও) এবং এই বিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্টের পদ বিলুপ্ত করা হবে। এমআইটি’র প্রেসিডেন্ট স্যালি কোর্নব্লুথ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “আমরা মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে চাই, যারা বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসবে এবং এমআইটি-তে নিজেদের আপন মনে করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাইভার্সিটি, ইক্যুইটি এবং ইনক্লুশন বিষয়ক প্রোগ্রামগুলো নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এমন সব নীতির বিরোধিতা করে আসছিল, যেগুলোর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ফেডারেল অনুদান হারাবার ঝুঁকিতে ছিল।

এই প্রেক্ষাপটে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের DEI প্রোগ্রামগুলো সীমিত করতে বাধ্য হচ্ছে। এই প্রোগ্রামের আওতায় সাধারণত বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, ও লিঙ্গের মানুষের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয় এবং তাদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরি করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের নীতি পরিবর্তনের ফলে সংখ্যালঘুদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, ডাইভার্সিটি প্রোগ্রামগুলো তাদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে।

তবে, এমআইটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা স্থানীয় পর্যায়ে কমিউনিটি বিল্ডিংয়ের ওপর জোর দেবে, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করবে।

এই ঘটনার পাশাপাশি, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকাভুক্তি বন্ধ করারও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, ফেডারেল গ্রান্ট বিষয়ক প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলার আটকে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, এমআইটি-র এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে শিক্ষাঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন