গাজায় যুদ্ধবিরতি: জিম্মি মুক্তি ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে অচলাবস্থা
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বন্ধ এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনা চলছে।
তবে, যুদ্ধবিরতির শর্তাবলী নিয়ে এখনো জটিলতা বিদ্যমান।
উইটকফ এর প্রস্তাব অনুযায়ী, আলোচনা সফল হলে দুই মাসের জন্য যুদ্ধ বিরতি হতে পারে। এই সময়ে হামাস কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেবে।
বিনিময়ে, ইসরায়েল কারাবন্দী ১,১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে পারে। যাদের মধ্যে গুরুতর অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ১০০ জনেরও বেশি বন্দী রয়েছেন।
অন্যদিকে, হামাস চাইছে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সৈন্য প্রত্যাহার। তারা গাজার নিয়ন্ত্রণ একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে চায়।
যদিও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের সম্পূর্ণ ধ্বংস অথবা তাদের নিরস্ত্র করা না পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি গাজার নিরাপত্তা সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলছেন।
এই পরিস্থিতিতে, উভয় পক্ষের মধ্যে মূল বিরোধ হলো যুদ্ধবিরতির সময়সীমা নিয়ে। ইসরায়েল চায় স্বল্পমেয়াদী যুদ্ধবিরতি, যা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করবে।
অন্যদিকে, হামাস চাইছে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, যা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এতে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজার বিশাল এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।
প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বর্তমানে হামাসের হাতে এখনো ৫৮ জন জিম্মি রয়েছে। তাদের মুক্তির বিনিময়ে হামাস দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি চাইছে।
তবে, ইসরায়েল চাইছে হামাসকে দুর্বল করতে এবং তাদের ভবিষ্যৎ ক্ষমতা সীমিত করতে।
গাজা যুদ্ধের মানবিক পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জাতিসংঘের মতে, গাজার বাসিন্দারা খাদ্য ও জরুরি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
তাদের জীবনযাত্রা চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
আলোচনা এখনো চলমান, তবে সমঝোতায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। উভয়পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস এবং ভিন্ন ভিন্ন শর্তের কারণে একটি চূড়ান্ত সমাধানে আসা কঠিন।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে, কিন্তু ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একটি স্থায়ী সমাধান এখনো অধরা।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস