1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 27, 2025 11:05 AM
সর্বশেষ সংবাদ:
পিরোজপুর হিজড়াদের টেকসই উন্নয়নে কিক-অফ মিটিং অনুষ্ঠিত   ৩ বছরের শিশুর বন্দুকের গুলিতে যুবকের মৃত্যু: কিভাবে ঘটল এই ভয়ংকর ঘটনা? লিসা’র প্রেমিক জডি’র আসল রূপ ফাঁস! বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন লারসা নজরকাড়া! টেইলর সুইফটের সাথে ট্র্যাভিস কেলসের অন্তরঙ্গ নাচ, ভাইরাল ভিডিও! ছোট বাথরুমের জিনিসপত্র: স্টোরেজ ক্যাবিনেটে ৪৬% ছাড়! স্বামীকে নিয়ে স্ত্রীর চরম আপত্তি! রাতের এই ঘটনা শুনে হতবাক সবাই মাত্র $18-এ! ৬ মাইল হাঁটার জুতা! Amazon-এ বিশাল অফার, এখনই দেখুন! বিচ্ছেদের ২ সপ্তাহ পর: প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্কট উলফের বিস্ফোরক পদক্ষেপ! মৃত্যুর আগে নিজেই মৃত্যুর ঘোষণা, স্তব্ধ সকলে!… মাছ বন্ধ থাকায় কাপ্তাই লেকে কয়েক হাজার জেলে নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে 

প্রেমের গল্প নাকি পুলিশি চক্রান্ত? চাঞ্চল্যকর মামলায় রায়!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Friday, June 13, 2025,

বোস্টন পুলিশের এক কর্মকর্তার মৃত্যুরহস্য, কাঠগড়ায় প্রেমিকা : চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানি।

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরের বাইরে কানটন এলাকায় ২০২২ সালে বোস্টন পুলিশের এক কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পুলিশ অফিসার জন ও’কীফের (৪৬) মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর প্রেমিকা কারেন রিডকে (৪৫) অভিযুক্ত করা হয়েছে।

ঘটনার কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এই মামলার শুনানি শেষে বর্তমানে চূড়ান্ত যুক্তিতর্কের পালা চলছে। মামলার শুনানিতে একদিকে যেমন উঠে এসেছে প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জেরে এই হত্যাকাণ্ড, তেমনই অন্যদিকে, পুলিশের কিছু সদস্যের যোগসাজশে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

অভিযোগ অনুযায়ী, কারেন রিড তাঁর গাড়ি দিয়ে জন ও’কীফকে আঘাত করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে আসেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তুষারে জমে তাঁর মৃত্যু হয়।

ঘটনার সময় কানটনের একটি বাড়িতে পার্টি চলছিল, যেখানে স্থানীয় পুলিশ এবং ফেডারেল এজেন্টদের আনাগোনা ছিল। কারেন রিডের বিরুদ্ধে সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডার, বেপরোয়াভাবে মানুষ খুন এবং ঘটনাস্থল ত্যাগ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তবে কারেন রিডের আইনজীবীরা শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তাঁদের দাবি, ও’কীফের মৃত্যুর পেছনে একটি ষড়যন্ত্র কাজ করেছে, যেখানে প্রমাণ লোপাটেরও চেষ্টা করা হয়েছে।

তাঁদের ধারণা, ও’কীফের মৃত্যুর জন্য কারেনকে ফাঁসানো হয়েছে।

এই মামলার প্রথম শুনানি এক জুরি সদস্যের কারণে বাতিল হয়ে যায়। পরে কয়েকজন জুরি সদস্য জানান, তাঁরা সবাই একমত হয়েছিলেন যে কারেন রিডকে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ—সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।

শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলিরা মূলত ঘটনার ওপর জোর দিয়েছেন। বিশেষ কৌঁসুলি হ্যাঙ্ক ব্রেনান কারেন রিডের একটি বক্তব্য তুলে ধরেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, সম্ভবত তাঁর গাড়ির ধাক্কায় ও’কীফের মৃত্যু হয়েছে।

তবে রিডের আইনজীবীরা জানান, পুলিশের রিপোর্টে নয়, একটি তথ্যচিত্রের সাক্ষাৎকারে তিনি এমনটা বলেছিলেন। ওই সাক্ষাৎকারে কারেন বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি না আমি তাকে আঘাত করেছি’, তবে ‘হয়তো লেগেছিল’।

শুনানিতে, মামলার প্রধান তদন্তকারী মাইকেল প্রক্টরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি কারেন রিড সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্য করেছিলেন। প্রথম শুনানিতে প্রক্টরকে সেই মন্তব্যগুলো পড়ে শোনাতে বলা হলেও, দ্বিতীয়বার কৌঁসুলিরা অন্য কারও মাধ্যমে তা পাঠ করান।

অন্যদিকে, প্রক্টরের এক বন্ধুকে দিয়ে তাঁর কিছু বার্তা পাঠ করানো হয়, যেখানে ইঙ্গিত ছিল, তিনি ঘটনার শুরু থেকেই কারেন রিডকে সন্দেহের চোখে দেখছিলেন। প্রক্টর নিজেও স্বীকার করেছেন, তিনি কেভিন অ্যালবার্ট নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বন্ধু ছিলেন, যিনি ছিলেন ওই বাড়ির মালিকের ভাই।

এই সময়ে কৌঁসুলিরা ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করেন। তাঁরা দেখানোর চেষ্টা করেন, কারেন রিডের গাড়ির ভাঙা অংশ ও’কীফের শরীরে আঘাত হানে।

আইনজীবীরা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ও’কীফের বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় কারেন রিডের গাড়ির সঙ্গে তাঁর গাড়ির ধাক্কা লেগেছিল, যার ফলে তাঁর গাড়ির লাইট ভেঙে যায়।

তাঁদের ধারণা, প্রক্টর এবং অন্যরা মিলে হয়তো ও’কীফের শরীরের কাছে গাড়ির ভাঙা অংশ রেখে এসেছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা তাঁদের সাক্ষ্যে জানান, ও’কীফের ফোনের ডেটা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাঁর ফোন ফ্ল্যাগপোলের কাছে ছিল, যেখানে তাঁর মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ফোনে কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি এবং ফোনের ব্যাটারির তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল।

অন্য একজন বিশেষজ্ঞ জিপিএস ও ফোনের ডেটা ব্যবহার করে দেখিয়েছেন, ঘটনার সময় কারেন রিডের গাড়ি ওই স্থানে ছিল।

আরেকজন বিশেষজ্ঞ জানান, কারেন রিডের গাড়িটি প্রায় ২৩ মাইল গতিতে (৩৭ কিলোমিটার) প্রায় ৫০ ফুটের বেশি ব্যাক করেছিল।

ম্যাসাচুসেটস স্টেট পুলিশ ক্রাইম ল্যাবের ডিএনএ ইউনিটের ফরেনসিক বিজ্ঞানী আন্দ্রে পোর্টো বিভিন্ন পরীক্ষার বিস্তারিত জানান। এর মধ্যে ছিল গাড়ির ভাঙা লাইট এবং উঠোনে পাওয়া একটি ভাঙা ককটেল গ্লাসের টুকরা।

পরীক্ষায় ও’কীফের ডিএনএ’র সঙ্গে সেগুলোর মিল পাওয়া গেছে। কারেন রিডের গাড়িতে পাওয়া একটি চুলও ও’কীফের ছিল।

পোর্টো আরও জানান, গাড়ির বাইরের অংশে এবং ও’কীফের পোশাকে তিনজন ব্যক্তির ডিএনএ পাওয়া গেছে—ও’কীফ এবং আরও দুইজন অজ্ঞাত ব্যক্তি।

শুনানিতে, সরকারি কৌঁসুলিরা একজন নিউরোসার্জনকে হাজির করেন, যিনি জানান, ও’কীফের মাথায় ‘ক্লাসিক ব্লান্ট ট্রমা ইনজুরি’ ছিল, যা পেছন থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে হয়ে থাকতে পারে।

তাঁদের মতে, ঘটনাস্থলে পাওয়া ভাঙা ককটেল গ্লাসও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ, কারণ ও’কীফকে নামিয়ে দেওয়ার সময় তাঁর হাতে সেটি ছিল।

কৌঁসুলিরা আরও উল্লেখ করেন, কারেন রিড ও ও’কীফের মধ্যে ঝগড়া হতো। রিডের ফোন থেকে পাওয়া একটি ভয়েসমেলে শোনা যায়, তিনি ও’কীফকে বলছেন, ‘আমি তোমাকে ঘৃণা করি’।

ধারণা করা হয়, ও’কীফ যখন তুষারে পড়ে ছিলেন, তখন এই ভয়েসমেসেটি এসেছিল।

তবে কারেন রিডের আইনজীবীরা ঘটনার ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছেন। তাঁরা দেখানোর চেষ্টা করেছেন, ও’কীফের বন্ধু ও পরিচিতদের একটি চক্র রিডকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

এই তালিকায় ছিলেন ফেডারেল এজেন্ট ব্রায়ান Higgins, যিনি রিডের সঙ্গে ফ্লার্ট করতেন।

আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, এর জেরে কোনো মারাত্মক ঘটনা ঘটেছিল কি না। ও’কীফের মৃত্যুর রাতে Higgins ওই পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিডের গাড়ির লাইট ভাঙার বিষয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যা দেন।

তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শী, ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ও’কীফের মৃত্যুর পরদিন সকালে যখন তিনি তাঁর গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন, তখন তাঁর গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে লাইট ভেঙে যায়।

কারেন রিডের গাড়ি যে গ্যারেজে রাখা হয়েছিল, সেখানকার এক পুলিশ কর্মকর্তা নিকোলাস বারোস জানান, গাড়িটি প্রথমবার আসার সময় লাইটে সামান্য ফাটল ছিল।

আইনজীবীরা জানান, পরে লাইটের আরও ক্ষতি হয়েছে, যা প্রমাণ লোপাটের একটি অংশ।

আসামিপক্ষের একজন বিশেষজ্ঞ জানান, পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, কারেন রিডের গাড়ির লাইটের ক্ষতি এবং ও’কীফের পোশাকে আঘাতের ধরন, সরকারি পক্ষের বর্ণনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, ঘটনার রাতে পার্টি যেখানে হয়েছিল, সেই বাড়িতে কেন তদন্তকারীরা প্রবেশ করেননি।

যদিও প্রত্যক্ষদর্শী ও কৌঁসুলিরা জানিয়েছেন, ও’কীফ ওই বাড়ির ভেতরে যাননি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী এলিজাবেথ ল্যাপোসাটা জানান, ও’কীফের আঘাতগুলো মাথার পেছনের দিকে ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের মতো ছিল, তবে তাঁর চোখের আঘাতগুলো রিডের গাড়ির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

তিনি মনে করেন, সম্ভবত রিডের গাড়ির আঘাতে ও’কীফের মৃত্যু হয়নি।

মামলার শুনানিতে, ওই পার্টিতে উপস্থিত জেনিফার ম্যাককেবের একটি অনুসন্ধানের বিষয় নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

ও’কীফের মৃত্যুর পর তিনি ‘কতক্ষণে ঠান্ডায় মৃত্যু হয়’ (hos long to die in cold) লিখে ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেছিলেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, ম্যাককেব ভোররাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে এই অনুসন্ধান করেছিলেন এবং আসল হত্যাকারীকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন।

তবে কৌঁসুলিদের দাবি, ও’কীফের মরদেহ উদ্ধারের পরে তিনি এই অনুসন্ধান করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ও’কীফের মৃত্যুর রাতে পার্টিতে উপস্থিত অন্যদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

ওই পার্টিটি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ব্রায়ান অ্যালবার্টের বাড়িতে হয়েছিল।

ও’কীফের মৃত্যুর পর অ্যালবার্টরা তাঁদের কুকুর ক্লোকে সরিয়ে দেন এবং বাড়ির বেসমেন্ট সংস্কার করেন, পরে তাঁরা ক্ষতি স্বীকার করে বাড়িটি বিক্রি করে দেন।

চিকিৎসক মেরি রাসেল জানান, ও’কীফের হাতে যে আঘাতের চিহ্ন ছিল, তা কুকুরের কামড়ের ফলে হয়েছিল।

সরকারি কৌঁসুলিরা এই আঘাতের জন্য রিডের গাড়িকে দায়ী করেন।

আদালত মেডিকেল পরীক্ষক ল্যাপোসাটাকে কুকুরের কামড়ের বিষয়ে সরাসরি সাক্ষ্য দিতে অনুমতি দেননি, তবে তিনি জানান, ও’কীফের কিছু আঘাত পশু কামড়ের মতো ছিল, যা গাড়ির লাইটের আঘাতের সঙ্গে মেলে না।

আসামিপক্ষ এমন কিছু ফোন রেকর্ড উপস্থাপন করে, যেখানে দেখা যায়, ও’কীফের মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর অ্যালবার্ট ও হিগিন্সের মধ্যে কিছু অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল।

পরে তাঁরা তাঁদের ফোন নষ্ট করে ফেলেন।

হিগিন্স প্রথম শুনানিতে স্বীকার করেন, তিনি তাঁর ফোনের সিম কার্ড ধ্বংস করে একটি সামরিক ঘাঁটিতে ফেলে দিয়েছেন।

ম্যাককেবের কিছু রেকর্ডও পেশ করা হয়, যেখানে দেখা যায়, তিনি মধ্যরাতের পর বারবার ও’কীফকে ফোন করেছিলেন, যেগুলোকে তিনি ‘ভুল করে ডায়াল’ হওয়া কল হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

যদি কারেন রিড দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

বর্তমানে চূড়ান্ত যুক্তিতর্কের পর আদালত রায় ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT