ইরানকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা, তেহরানের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন।
মধ্যপ্রাচ্যে আবারও উত্তেজনা। এবার ইসরায়েল সরাসরি ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। শুক্রবার চালানো এই হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যার পাশাপাশি দেশটির পারমাণবিক কেন্দ্র না তানজেও (Natanz) ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে ইরানের পক্ষে তাৎক্ষণিক ও জোরালো জবাব দেওয়া কঠিন হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক ও গোয়েন্দা ক্ষেত্রে তারা কতটা শক্তিশালী। এমনকি তারা কোনো ধরনের হতাহত বা মিত্র দেশগুলোর প্রতিক্রিয়ার পরোয়া করছে না। লেবাননের হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে তাদের আগের অভিযানের মতোই, এই হামলার প্রস্তুতিও সম্ভবত কয়েক মাস বা বছর ধরে নেওয়া হয়েছিল।
খবরে প্রকাশ, ইরানের রাজধানী তেহরানেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে, যেখানে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ব্যক্তি ও স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইরানের তিনজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছেন এবং দেশটির পরমাণু আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা একজনও নিহত হয়েছেন। এর ফলে ইরানের সামরিক সক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং তাদের পক্ষে প্রতিশোধ নেওয়া কঠিন হবে।
ইসরায়েলের এই হামলায় ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্রগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অক্টোবরেও ইসরায়েল ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপর আঘাত হেনেছিল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইরানের নাতানজ পারমাণবিক কেন্দ্রেও আঘাত হেনেছে ইসরায়েল। যদিও ক্ষতির পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়, তবে এটি ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ব্যাহত করতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই ধরনের হামলা চালানোর অন্যতম কারণ হলো ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করার চেষ্টা চললেও, ইসরায়েল মনে করে, এতে তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। তাই তারা একাই এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
বর্তমানে, ইরানের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। তবে ইরানের পক্ষ থেকে এর জবাব কী হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তারা হয়তো দুর্বল দিক থেকে আঘাত হানতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতিতে ইরানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।
সব মিলিয়ে, ইসরায়েলের এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বিশেষ করে জাতিসংঘের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন