ইরানে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান, শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা, উত্তেজনা চরমে
মধ্যপ্রাচ্যে আবারও যুদ্ধের দামামা। ইসরায়েল শুক্রবার ভোরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে আঘাত হেনেছে এবং দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে। এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের পর তেহরান কঠোর জবাব দেওয়ার কথা জানিয়েছে।
শুক্রবার ভোররাতে, ইরানের রাজধানী তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইরানের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে দেশটির পরমাণু স্থাপনাগুলোতে বিমান হামলা চালিয়েছে।
হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে দুর্বল করা। ইসরায়েলের দাবি, ইরান খুব দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এই অভিযান ইরানের পারমাণবিক হুমকি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের প্রধান মেজর জেনারেল হোসেন সালামি, সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা আলী শামখানি এবং বিপ্লবী গার্ডের বিমান বাহিনীর কমান্ডার আলী হাজিজাদেহ নিহত হয়েছেন।
এই ঘটনার পর ইরানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, তারা এর উপযুক্ত জবাব দেবে। এরই মধ্যে, ইসরায়েলের দিকে একশ’র বেশি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে তেহরান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয় বলে জানিয়েছে। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েল একতরফাভাবে এই হামলা চালিয়েছে এবং তারা এতে জড়িত ছিল না।
তবে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে নতুন একটি পরমাণু চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে একটি পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যেখানে তেহরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করতে রাজি হয়েছিল।
তবে, ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের পর ইরানের প্রতিক্রিয়া এবং এর পরবর্তী ঘটনাক্রমের দিকে তাকিয়ে আছে বিশ্ব।
তথ্য সূত্র: সিএনএন