ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও হতাহতের মধ্যে চতুর্থ দিনে প্রবেশ। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। সোমবার ভোরে ইরান ইসরায়েলে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে দেশটির বিভিন্ন শহরে সাইরেন বাজানো হয়।

জরুরি পরিষেবা সূত্রে খবর, এই হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্ভবত ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে, যার ফলে তেল আবিবে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। উপকূলীয় শহরটিতে এরপর কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।

উভয়পক্ষের মধ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ফলে বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে।

রবিবার ইরান জানায়, ইসরায়েল তাদের তেল শোধনাগার ও সামরিক বাহিনীর বিপ্লবী গার্ডের একজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। এর পাশাপাশি তারা বিভিন্ন জনবসতিপূর্ণ এলাকাতেও হামলা চালিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে উভয় দেশেই হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি জানিয়েছেন, তেল আবিবে অবস্থিত মার্কিন কনস্যুলেট ভবনের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এই ক্ষতি হয়।

তবে কনস্যুলেটের কোনো কর্মী আহত হননি। সতর্কতা হিসেবে, দিনের বেলা তেল আবিব ও জেরুজালেমের দূতাবাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ১,২৭৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হতাহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি বেসামরিক নাগরিক।

ইসরায়েল জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে তাদের দেশে ১৪ জন নিহত এবং ৩৯০ জন আহত হয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের জরুরি বৈঠক মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ইইউ’র শীর্ষ কূটনীতিক এই সংকট নিরসনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে এবং তেহরান ও তেল আবিবের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন।

অন্যদিকে, জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীকে হত্যার ইসরায়েলি পরিকল্পনা অনুমোদন করেননি।

যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা যায়, ইসরায়েল খামেনীকে হত্যার একটি পরিকল্পনা জানালে ট্রাম্প তাতে ভেটো দেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সংঘাত আরও বাড়িয়ে দিতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে রাজি ছিল না।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস