যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন আইন নিয়ে বিতর্ক: আটকের শিকারদের অপরাধের ধরন নিয়ে প্রশ্ন।
যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) বিভাগের হেফাজতে থাকা অভিবাসীদের অপরাধের ধরন নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু অভ্যন্তরীণ তথ্য জানাচ্ছে, কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে আটকদের অপরাধের ধরনের একটি বড় ধরনের অমিল রয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাস থেকে শুরু করে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সময়ে আইসিই হেফাজতে নেওয়া অভিবাসীদের মধ্যে গুরুতর অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তের সংখ্যা খুবই কম। সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর হাতে আসা সরকারি নথি থেকে জানা গেছে, এই সময়ে আটক হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ১০ শতাংশেরও কম মানুষের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ বা গুরুতর হামলার মতো অভিযোগ ছিল।
অন্যদিকে, এই সময়ে আটক হয়া অভিবাসীদের মধ্যে ৭৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ ছিল না, অথবা তাদের বিরুদ্ধে সামান্য কিছু ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ ছিল। সাধারণত, অভিবাসন সংক্রান্ত অথবা ট্রাফিক-সংক্রান্ত অপরাধের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সময়কালে অভিবাসন ইস্যুতে বেশ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই সময়ে বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয় এবং এর তীব্র সমালোচনাও হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রায়ই তাদের আটকের কারণ হিসেবে গুরুতর অপরাধে জড়িত অভিবাসীদের কথা উল্লেখ করে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ তথ্য বলছে ভিন্ন কথা।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের পক্ষ থেকে যদিও বলা হয়েছে, তারা সব সময় ‘সবচেয়ে খারাপ’ অপরাধীদের লক্ষ্য করে কাজ করে। তাদের মধ্যে গ্যাং সদস্য, খুনী এবং ধর্ষণকারীরাও রয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই ধরনের তথ্য প্রচার করে আসল চিত্রটি আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আটকদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছিল, তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে। একইসঙ্গে, যারা সামান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের আটকের বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিবাসন ইস্যুতে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো দেশের ভাবমূর্তির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সামান্য ভুলের কারণেও অভিবাসীদের আটক করা হচ্ছে।
আইনজীবী এবং অধিকারকর্মীরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত না থাকা সত্ত্বেও বহু মানুষকে আটক করা হচ্ছে। এমনকি যাদের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, তাদেরও আটক করা হচ্ছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বাইডেন প্রশাসনের সময় সীমান্তে আটকের সংখ্যা বেশি ছিল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন