দিওরের প্যারিস ফ্যাশন শো: ফ্যাশন ও ঐতিহ্যের এক নতুন দিগন্ত
প্যারিসের আলো ঝলমলে মঞ্চে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো দিওরের (Dior) ২০২৩ সালের শরৎকালীন ফ্যাশন শো। মারিয়া গ্রাৎসিয়া চিউরির ডিজাইন করা পোশাকে ছিল এক ভিন্নতা, যা ফ্যাশন দুনিয়ায় নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভার্জিনিয়া উলফের উপন্যাস ‘অরল্যান্ডো’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চিউরি পোশাকের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সময় ও লিঙ্গের এক চমৎকার দ্বান্দিক রূপ।
শো-এর মূল আকর্ষণ ছিল পোশাকের কাটিং এবং ডিজাইন। ঐতিহাসিক পোশাকের উপাদান, যেমন – উঁচু নেকলাইন বা “রাফ” (ruffs) – এর আধুনিক সংস্করণ ছিল চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে, জলদস্যুদের পোশাকের অনুপ্রেরণায় তৈরি আলগা প্যান্ট এবং ধর্মযাজকদের পোশাকের আদলে তৈরি গাউনগুলোতে দেখা গেছে ভিন্নধর্মী নকশা। একদিকে ছিল ঐতিহাসিক পোশাকের ছোঁয়া, অন্যদিকে আধুনিকতার মিশেল – যা চিউরির ডিজাইন করা পোশাকগুলোকে দিয়েছে এক বিশেষত্ব।
ফ্যাশন শো’র মঞ্চসজ্জাও ছিল চমকপ্রদ। বিশাল আকারের আগ্নেয় শিলার উপস্থিতি দর্শকদের এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়। মঞ্চের এই রুক্ষ ও আদিম রূপ চিউরির পোশাকের সঙ্গে এক চমৎকার দ্বন্দ তৈরি করেছে।
তবে, শো’টির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিলেন জনপ্রিয় কোরিয়ান পপ তারকা জিসু। দিওরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে তার উপস্থিতি ফ্যাশনপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা তৈরি করে। জিসু’র আগমনকে কেন্দ্র করে শো-এর বাইরে ভক্তদের ভিড় সামলাতে নিরাপত্তা কর্মীদের বেশ বেগ পেতে হয়।
এই ফ্যাশন শো’তে চিউরির ডিজাইন করা পোশাকগুলোতে নারীবাদের একটি শক্তিশালী দিক ফুটে উঠেছে। পোশাকের মাধ্যমে চিউরি নারীদের নিজস্ব ক্ষমতায়নের ধারণা তুলে ধরেছেন। ঐতিহ্যবাহী পোশাকের ধারা ভেঙে, তিনি পোশাকের মাধ্যমে লিঙ্গবৈষম্যের ধারণাকেও প্রশ্ন করেছেন।
তবে, ফ্যাশন দুনিয়ায় গুঞ্জন উঠেছে, হয়তো এই শো’টি ছিল মারিয়া গ্রাৎসিয়া চিউরির জন্য দিওরের সঙ্গে শেষ কাজ। শোনা যাচ্ছে, লোয়েভের (Loewe) ডিজাইনার জোনাথন অ্যান্ডারসন খুব শীঘ্রই এই দায়িত্ব নিতে পারেন। যদি এমনটা হয়, তবে তা দিওরের সৃজনশীল জগতে একটি বড় পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস