সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারা সম্প্রতি দেশটিতে চলমান সহিংসতাকে ‘প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।
সরকারপন্থী বাহিনী ও ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকশ মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে নির্বিচারে মানুষ হত্যার অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, সংঘর্ষ এখনো চলছে, তবে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র তাদের কাছে স্পষ্ট নয়।
দেশটির রাজধানী দামেস্কে এক মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় শারা বলেন, “দেশের পরিস্থিতি আমাদের জন্য প্রত্যাশিত চ্যালেঞ্জ। জাতীয় ঐক্য ও শান্তি বজায় রাখতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা সবাই একসঙ্গে বসবাস করতে সক্ষম।”
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস (এসএনএইচআর) জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত অন্তত ৩১১ জন নিহত হয়েছে।
সংস্থাটি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছে, মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।
এসএনএইচআর-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সরকারি বাহিনী লাটাকিয়া, তারতুস ও হামা অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযান শুরু করার পর অন্তত ১৬৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৭ জন শিশু ও ১৩ জন নারীও রয়েছে।
বাশার আল-আসাদ অনুগত মিলিশিয়ারা আরও ১৪৭ জনকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১২১ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
তবে, সিএনএন এসএনএইচআর-এর দেওয়া এই হিসাব নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি।
মৃতের সংখ্যা সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য সিরীয় সরকারের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি মুসলিম জঙ্গিরা ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে এই সহিংসতা সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
বাশার আল-আসাদ সংখ্যালঘু আলাউয়েত সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন।
ক্ষমতা হারানোর পর থেকে দেশের রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক কাঠামো পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে।
ভূমধ্যসাগরের উপকূলীয় এলাকা লাটাকিয়া ও তারতুসে বাশার আল-আসাদের অনুসারীর সংখ্যা বেশি ছিল।
আলাউয়েত সম্প্রদায়ের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ আসাদ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।
যদিও ডিসেম্বর মাসের পর অনেক আলাউয়েত অস্ত্র সমর্পণ করেছেন, অনেকে এখনও তা করেননি।
এই সহিংসতার কারণে নতুন সরকারের প্রতি অসন্তুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে শান্ত করার ক্ষেত্রে যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন