1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 27, 2025 7:40 PM
সর্বশেষ সংবাদ:

কানাডার দুগ্ধশুল্ক: ট্রাম্পের লুকানো তথ্য!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Monday, March 10, 2025,

ট্রাম্পের কানাডার দুগ্ধ পণ্যের শুল্ক বিষয়ক দাবির সত্যতা যাচাই

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য একটি জটিল বিষয়, যা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতির উপর গভীর প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি, কানাডার দুগ্ধ পণ্যের উপর আরোপিত শুল্ক নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ট্রাম্পের এই দাবির সত্যতা যাচাই করা জরুরি, কারণ এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে দুটি দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং বিশ্ব অর্থনীতির গতিপথ।

ট্রাম্প প্রায়ই বলে থাকেন যে, কানাডা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা দুগ্ধ পণ্যের উপর ২০০ শতাংশেরও বেশি শুল্ক আরোপ করে। তবে, এই অভিযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তিনি উল্লেখ করতে ভুলে যান। ট্রাম্পের সময়েই স্বাক্ষরিত ‘যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি’ (USMCA) অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শুল্কমুক্ত দুগ্ধ পণ্য কানাডায় রপ্তানি করতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্র এখনও পর্যন্ত কোনো প্রকার দুগ্ধ পণ্যের ক্ষেত্রেই এই শুল্কমুক্ত রপ্তানির সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে, যেমন দুধের ক্ষেত্রে, এই সীমা অর্ধেকেরও নিচে রয়েছে।

কানাডার কৃষি বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ আল মুসেল এক সাক্ষাৎকারে জানান, ‘ব্যবহারিকভাবে, এই শুল্ক আসলে কেউই পরিশোধ করে না।’

ট্রাম্পের আরেকটি দাবি ছিল, কানাডা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে দুগ্ধ পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। কিন্তু সরকারি নথি এবং উভয় দেশের বাণিজ্য সংস্থাগুলো নিশ্চিত করেছে যে, বাইডেনের সময়ে শুল্কের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ট্রাম্প যে শুল্কের কথা বলছেন, তা আসলে USMCA চুক্তির অংশ, যা তিনি ২০১৮ সালে স্বাক্ষর করেছিলেন এবং প্রায়ই এটিকে ‘সেরা বাণিজ্য চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, ট্রাম্প শুক্রবার কানাডার বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, সম্ভবত আগামী ২ এপ্রিল এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

কানাডার ‘সরবরাহ ব্যবস্থাপনা’ নীতি দেশটির কৃষক এবং দুগ্ধ, ডিম ও পোল্ট্রি শিল্পকে বিদেশি প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করে। এই নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক সব সময় মসৃণ ছিল না। USMCA চুক্তির অধীনে, কানাডা ১৪টি দুগ্ধ পণ্যের (দুধ, ক্রিম, পনির, আইসক্রিম, মাখন ইত্যাদি) ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত শুল্কমুক্ত বাণিজ্য নিশ্চিত করতে রাজি হয়। এই চুক্তির ফলে মার্কিন ব্যবসায়ীরা কানাডার বাজারে প্রবেশের আরও বেশি সুযোগ পায়।

তবে, USMCA কানাডাকে শুল্কমুক্ত কোটার অতিরিক্ত আমদানির উপর শুল্ক কমাতে বাধ্য করতে পারেনি। আন্তর্জাতিক দুগ্ধ খাদ্য সংস্থা (International Dairy Foods Association) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও কানাডার শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি। তাদের মতে, কানাডা প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার প্রবেশকে কঠিন করে তুলছে।

বাস্তবে, যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি পণ্য রপ্তানির জন্য কানাডা দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। শুধু তাই নয়, দুগ্ধ পণ্যের ক্ষেত্রেও দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের দুগ্ধ পণ্য কানাডায় রপ্তানি করেছে।

বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রেক্ষাপটে, এই ধরনের বিতর্ক বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের অর্থনীতিও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কনীতি আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে প্রভাবিত করে। তাই, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই জটিল বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত থাকা জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT