1. [email protected] : adminb :
  2. [email protected] : Babu : Nurul Huda Babu
March 17, 2025 3:42 PM
সর্বশেষ সংবাদ:
গণমাধ্যম সপ্তাহের আগে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়েছে বিএমএসএফ ৩৬ বছরের অভিজ্ঞ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের চোখে সেরা! জানুন, ৪০ ডলারের ব্যাগের গোপন রহস্য হোটেল কক্ষে যৌনতা: বৃদ্ধ দম্পতির সাথে যা ঘটল, জানলে চমকে যাবেন! বৃষ্টির খেলায় টাই: প্লেয়ার্স চ্যাম্পিয়নশিপে ম্যাকলরয় বনাম স্পাউনের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই! অর্থনীতি: সুসংবাদেও কি খারাপ সময়? ট্রাম্পের নীতিতে অস্থির বাজার! ভ্রমণের স্বর্গ: আকর্ষণীয় অফার সহ গ্রিসের সেরা ৩১টি দ্বীপ! টাম্পার অভিবাসন: খাবারের রাজ্যে এক দারুণ রূপকথা! আলোচনা তুঙ্গে! জা’মার চেজ-এর বিশাল চুক্তিতে কাঁপছে ফুটবল জগৎ সিলেকশন সানডে: শীর্ষ দল, বিতর্ক আর চমক! ৬০ বছর বয়সে জীবনের মোড়: ডাস্টবিন থেকে মুক্তি, কোটি টাকার ব্যবসা!

লেবাননের অর্থনীতি: ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর কি ঘুরে দাঁড়াবে?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Monday, March 10, 2025,

লেবাননের অর্থনীতি: সংকট থেকে উত্তরণের পথে?

ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত একটি দেশ, লেবানন। কয়েক বছর ধরে দেশটির অর্থনীতি এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি, এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা লেবাননের এই দুর্দশার মূল কারণ। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সম্ভবনা কতটুকু, তা নিয়েই আজকের আলোচনা।

লেবাননের অর্থনীতির এই দুরবস্থার পেছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ২০১৯ সালে, হোয়াটসঅ্যাপ কলে ট্যাক্স বসানোর প্রস্তাবের প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা মূলত সরকারের দুর্বল নীতি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল। এর আগে, ২০১৬ সালে, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা আকর্ষণ করতে এবং ব্যাংকিং খাতে তারল্য যোগানের জন্য “ফিনান্সিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং”-এর আশ্রয় নেয়, যা ছিল একটি বিতর্কিত পদক্ষেপ। বাজেট ঘাটতি এবং সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে।

২০২০ সালে, করোনা মহামারী আঘাত হানার ঠিক আগ মুহূর্তে, প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াবের সরকার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি লেবাননের দুর্বল স্বাস্থ্যখাতে চরম সংকট তৈরি করে, হাসপাতালগুলোতে শয্যা ও প্রয়োজনীয় ঔষধের তীব্র অভাব দেখা দেয়। পর্যটন এবং প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো অর্থের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা লেবাননের অর্থনীতিকে আরও দুর্বল করে তোলে।

ঐ বছরই, ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে বৈরুত। এই বিস্ফোরণ শুধু ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞই সৃষ্টি করেনি, বরং সরকারের দুর্নীতি ও অযোগ্যতাকেও প্রকাশ করে দেয়, যা জনগণের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থাহীনতা আরও বাড়িয়ে তোলে। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরাও এই ঘটনায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারান, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পরে।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পরে, যার প্রভাব লেবাননেও লাগে। জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে হিমশিম খাওয়া পরিবারগুলোর উপর এই সংকট আরও বেশি চাপ সৃষ্টি করে। সরকারও প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো দিতে ব্যর্থ হয়।

অর্থনৈতিক সংকট যখন চরম আকার ধারণ করে, তখন ব্যাংকগুলো জনগণের সঞ্চয়ে প্রবেশাধিকার সীমিত করে দেয়। এর প্রতিবাদে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে, সালি হাফিজ নামের এক নারী একটি খেলনা বন্দুক নিয়ে বৈরুতের একটি ব্যাংকে প্রবেশ করে নিজের জমানো টাকা ফেরত চান। তিনি দ্রুতই লেবাননের সাধারণ মানুষের কাছে প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠেন এবং “ওয়ান্ডার ওম্যান” নামে পরিচিতি পান।

২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া এই সংকটগুলো লেবাননকে এক গভীর খাদে নিয়ে যায়। অনেক পরিবার তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র বিক্রি করতে বাধ্য হয় এবং প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের উপর নির্ভরতা বাড়ে। জীবনধারণের তাগিদে, বহু লেবানিজ, বিশেষ করে দক্ষ profissionais, দেশ ত্যাগ করতে শুরু করেন।

সরকার সংকট মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ নেয়। ২০১৯ সালের শেষের দিকে, তারা দ্বৈত বিনিময় হার চালু করে এবং কিছু পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এর ফলে বাজারে সংকট তৈরি হয় এবং কালোবাজারি বেড়ে যায়। ২০২২ সালের শেষ নাগাদ, প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন এবং প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে, ঋণ খেলাপি হওয়া, মহামারী, বন্দর বিস্ফোরণ, মুদ্রার অবমূল্যায়ন এবং বিশ্বব্যাপী মূল্যবৃদ্ধি—সব মিলে এক অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকট তৈরি হয়।

২০২৩ সালে সরকার লিরার নোট মুদ্রণ বন্ধ করে দিলে বিনিময় হার স্থিতিশীল হতে শুরু করে। একই সঙ্গে, আগের বছর দাম নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়, যা বাজারে সংকট কমাতে সাহায্য করে।

কিন্তু, এই আশা বেশি দিন টেকেনি। গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহর সংঘর্ষ শুরু হয়। সীমান্ত জুড়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আক্রমণ চলতে থাকে। এরপর, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যার ফলে দেশটি আবারও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, এই যুদ্ধে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং উৎপাদন ও বাণিজ্যে ক্ষতির পরিমাণ ৫.১ বিলিয়ন ডলার। সবমিলিয়ে, দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

বর্তমানে, লেবাননে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এবং প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম। নতুন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর অনেক আশা করা হচ্ছে। ব্যাংক সংস্কার, বাণিজ্য বৃদ্ধি, এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে। তবে, দেশটির দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা তাদের জন্য একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।

লেবাননের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলবে। দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায়, এই মুহূর্তে দেশটির সাধারণ মানুষের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকার যদি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে মানুষের মধ্যে হতাশা আরও বাড়বে, যার ফলস্বরূপ আরও বেশি মানুষ দেশ ত্যাগ করতে পারে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT